ঢাকায় বাবা কাটেন পকেট, শিশুকন্যা ঢাল

ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গতকাল মুঠোফোন চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে আহত হন মোহাম্মদ সোহেল।  ছবি: প্রথম আলো
ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গতকাল মুঠোফোন চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে আহত হন মোহাম্মদ সোহেল। ছবি: প্রথম আলো

২৭ বছরের যুবকের কোলে তিন বছরের শিশু। সঙ্গে থাকা কিশোরের বয়স ১৫ বছরের বেশি হবে না। ওই যুবক ও কিশোর মিলে টার্গেট করে এক নারী মেডিকেল শিক্ষার্থীকে। কৌশলে তাঁর অ্যাপ্রনের পকেট থেকে মুঠোফোনটি চুরি করে তা সঙ্গে সঙ্গে চালান করে দেয় ১০ বছরের আরেক শিশুর হাতে।

গতকাল বুধবার ধানমন্ডি ৮ নম্বর সড়কে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভেতরেই ঘটে যায় ঘটনাটি। তবে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয় ওই যুবক ও দুই কিশোর।

বেলা একটার দিকে আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে হট্টগোল দেখা যায়। কয়েকজন মেডিকেল শিক্ষার্থী এক যুবককে মারধর করছেন। ওই যুবকের কোলে তিন বছরের শিশু। এই দুজনকে জড়িয়ে ধরে পিটুনি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে আরেক কিশোর।

পরে উপস্থিত কয়েক ব্যক্তি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিশুসহ ওই যুবক ও কিশোরকে সরিয়ে আনা হয়। এর মধ্যে ১০ বছর বয়সী আরেক শিশুকে চুরি যাওয়া মুঠোফোনসহ ধরে আনেন আরেক দল মেডিকেল শিক্ষার্থী। জানা যায়, ওই যুবকের নাম মোহাম্মদ সোহেল। তিন বছরের শিশুটি তাঁর মেয়ে। দুই কিশোর সম্পর্কে তাঁর শ্যালক। থাকে মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে।

মুঠোফোন হারানো আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসসুম জব্বার বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় সোহেল শিশুটিকে কোলে নিয়ে তাঁর পাশাপাশি হেঁটে আসছিল। এ সময় তাঁর সঙ্গে সোহেলের সামান্য ধাক্কা লাগে। খানিক পরেই তিনি দেখতে পান, তাঁর অ্যাপ্রনের পকেটে রাখা মুঠোফোনটি নেই। এ সময় তিনি দৌড়ে এগিয়ে যাওয়া সোহেল এবং সঙ্গে থাকা কিশোরকে ধরে ফেলেন। কলেজের অন্য শিক্ষার্থীরাও এগিয়ে আসেন। কিন্তু সে সময় এদের দুজনের কারও কাছেই মুঠোফোনটি ছিল না। পরে পিটুনির মুখে মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে কিশোর মো. ফারুক।

এই চক্রকে প্রথমে পিটুনির হাত থেকে উদ্ধার করেন ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিউল আলম। পরে তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর কলাবাগান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর কলাবাগান থানার এসআই মো. ফেরদৌস হোসেন বলেন, থানায় আনার পর ৩ ও ১০ বছরের শিশু দুটিকে পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। আটক সোহেল আর ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।