টানা ছুটিতে রাঙামাটির ৮০ শতাংশ হোটেলের কক্ষ বুক

কাপ্তাই হ্রদ এলাকা পর্যটকদের কাছে দারুণ আকর্ষণের। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
কাপ্তাই হ্রদ এলাকা পর্যটকদের কাছে দারুণ আকর্ষণের। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

পর্যটন শহর রাঙামাটিতে কাল শুক্রবার থেকে পর্যটকের ঢল নামবে। ৫ মে পর্যন্ত তা থাকবে বলে আশা করছেন সেখানকার হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৯ দিনের মধ্যে ৭ দিনই ছুটি। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে বেসরকারি ৪৫টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। প্রতি দিন তিন হাজার অতিথি হোটেল-মোটেলে থাকতে পারে। পর্যটকদের সেবা দিতে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে চার শতাধিক। গত দু-এক মাস ধরে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় হোটেল-মোটেল মালিকদের আয় কমে যায়। এ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেকার সময় পার করছেন। আগামীকাল ২৭ এপ্রিল থেকে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে অনেকে লম্বা ছুটি নিয়েছেন। এতে রাঙামাটির কাপ্তাই লেক, ঝুলন্ত সেতুসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে অনেক পর্যটক রাঙামাটিতে আসছেন। ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে।

২৭ ও ২৮ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল বুদ্ধপূর্ণিমার সরকারি ছুটি। ৩০ এপ্রিল যদিও ছুটি নেই, অনেকে দিনটিকে ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে নিচ্ছেন। এরপর ১ মে মহান মে দিবসের ছুটি। ২ শে পবিত্র শবে বরাতের সরকারি ছুটি। ৩ মে বৃহস্পতিবার ছুটি নেই। এরপর আবার দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। অনেক চাকরিজীবী সোমবার একদিন ছুটি নিয়ে টানা ছয় দিন আবার কেউ কেউ বৃহস্পতিবার একদিন ছুটি নিয়ে টানা ৫ দিনের ছুটি উপভোগ করছেন।

রাঙামাটি যাবেন আর ঝুলন্ত সেতু দেখবেন না, তা কী হয়। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
রাঙামাটি যাবেন আর ঝুলন্ত সেতু দেখবেন না, তা কী হয়। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নে রুইলুই পর্যটন কেন্দ্রেও অনেক পর্যটক যাচ্ছেন। রুইলুই পর্যটন কেন্দ্রে ইতিমধ্যে সব হোটেল, রিসোর্ট-কটেজ ভাড়া হয়ে গেছে।

রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রের রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রে সমিতির অন্তর্ভুক্তি ৬৫টি রিসোর্ট-কটেজসহ অন্তত ৮০টি হোটেল, রিসোর্ট-কটেজ রয়েছে। এসব হোটেল, রিসোর্ট-কটেজে দুই হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারবেন। আগামীকাল ২৭ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো কক্ষ খালি নেই। অন্যান্য দিনে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।

রাঙামাটি শহরে দোয়েল চত্বর এলাকার হোটেল প্রিন্সের মালিক মো. নেছার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আমাদের আগামীকাল ২৭ এপ্রিল থেকে ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। এ ছাড়া অনেক পর্যটক যোগাযোগ করছেন।

পর্যটকেরা কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমণ দারুণ উপভোগ করেন। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
পর্যটকেরা কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমণ দারুণ উপভোগ করেন। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

রাঙামাটি পর্যটক কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, আমাদের দুটি হোটেল-মোটেল ও ছয়টি কটেজে ৮৭টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হোটেল ও ছয়টি কটেজে সংস্কার কাজ চলছে। একটি মোটেলে ৪৯টি কক্ষ রয়েছে। ইতিমধ্যে ৪৯টি কক্ষ আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভাড়া হয়ে গেছে।

বেসরকারি হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুঈনুদ্দিন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, আমাদের সমিতিতে ৪৫টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে পর্যটক নেই বললে চলে। লম্বা ছুটিতে অধিকাংশ হোটেলের কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় কম।