বিএসএফের হাতে এ বছর কোনো বাংলাদেশি নিহত হননি: বিজিবি মহাপরিচালক

পাঁচ দিনের সীমান্ত সম্মেলনের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছবি: ইউএনবি
পাঁচ দিনের সীমান্ত সম্মেলনের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছবি: ইউএনবি

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে এ বছর কোনো বাংলাদেশি নিহত হননি বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। বিজিবি মহাপরিচালকের দাবি সমর্থন করে বিএসএফের মহাপরিচালক কে কে শর্মা বলেছেন, বিএসএফ পেশাদার বাহিনী এবং মানবাধিকারকে সম্মান করে।

পাঁচ দিনের সীমান্ত সম্মেলনের চতুর্থ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ কথা বলেন।

৪৬তম এ সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। আর বিএসএফ মহাপরিচালক ভারতীয় ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন।

এবারের সীমান্ত সম্মেলনের যৌথ প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তে বাংলাদেশিদের গুলি করা ও হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিবি মহাপরিচালক এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা এখন প্রাণঘাতী নয় এমন (নন-লেথাল) অস্ত্র ব্যবহার করার ফলে সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনা কমে এসেছে। তবে এর ফলে বিএসএফ সদস্যদের ওপর অপরাধীদের হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। বিএসএফ সদস্যরা কেবল আত্মরক্ষার্থেই নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, তবে অপরাধীদের হামলার মুখে একটা সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ার পরে আসলে বোঝার উপায় থাকে না শত্রুটি কোন দেশের নাগরিক। বিএসএফ সদস্যদের হাতে এভাবে সম্প্রতি তিনজন ভারতীয় নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালানের একটা শঙ্কা থাকে। সে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, একই সময়ে ভারতেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে সীমান্তে যেন কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে না পারে, সে জন্য দুই বাহিনীই সতর্ক থাকবে।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দুই দেশের অবস্থান সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, কেউ যেন অবৈধভাবে সীমান্ত পার হতে না পারে, সে জন্য দুই দেশই সতর্ক। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে যে উদ্বাস্তুরা এ দেশে এসেছে, তারা বিভিন্ন বিষয়ে সংবেদনশীল হতে পারে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যেন কিছু করতে না পারে, সে জন্য দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরাই সজাগ থাকবে।

কাল পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্তে দুই মহাপরিচালক যৌথভাবে উভয় বাহিনীর ‘জয়েন্ট রিট্রিট সেরেমনি’ উদ্বোধন করবেন। এরপর ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি দেশে ফিরবে।