পিরোজপুরে স্ত্রী-শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১

হীরা আক্তারের সামনেই বাবা ও বোনকে হত্যা করা হয়। ভগ্নিপতির হামলায় সেও আহত হয়েছে। সদর হাসপাতাল, পিরোজপুর, ২৬ এপ্রিল। ছবি: এ কে এম ফয়সাল
হীরা আক্তারের সামনেই বাবা ও বোনকে হত্যা করা হয়। ভগ্নিপতির হামলায় সেও আহত হয়েছে। সদর হাসপাতাল, পিরোজপুর, ২৬ এপ্রিল। ছবি: এ কে এম ফয়সাল

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার পাড়েরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, উপজেলার পাড়েরহাট এলাকার দিন মজুর জাহাঙ্গীর ফকির (৪৫) ও তাঁর মেয়ে নিপা আক্তার (২১)। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানকে (৩১) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নিপা আক্তারের সঙ্গে চার বছর আগে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার হাবিবুর রহমানের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির মেহেরাব নামের আড়াই বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক মাস ধরে নিপার সঙ্গে হাবিবুরের দাম্পত্য কলহ চলছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর ফকির তাঁর দুই মেয়ে নিপা আক্তার ও হীরা আক্তারকে (১৩) নিয়ে তরমুজ কেনার জন্য স্থানীয় পাড়েরহাট বাজারে যান। রাত আটটার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ওই বাজারের শহীদ মিনারের সামনে হাবিবুর রহমান ধারালো চাকু নিয়ে স্ত্রী নিপার ওপর হামলা করেন। একপর্যায়ে তিনি শ্বশুরকেও কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় বাবা ও বোনকে বাঁচাতে হীরা এগিয়ে এলে তাকেও জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁদের পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর ও নিপাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হীরা আক্তার প্রথম আলোকে বলে, ‘কয়েক মাস আগে আমার বোন নিপার সঙ্গে তাঁর স্বামী হাবিবুর রহমানের ঝগড়া হয়। এরপর থেকে আপু আমাদের বাড়িতে চলে আসেন। রাত আটটার দিকে আমরা পাড়েরহাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাবিবুর রহমান চাকু নিয়ে বাবা ও বোনকে কুপিয়ে জখম করেন।’

প্রত্যক্ষদর্শী শাহিন মোল্লা বলেন, ‘আমরা তিন বন্ধু বাজারে বসে গল্প করছিলাম। এ সময় হঠাৎ চিৎকার শুনে শহীদ মিনারের কাছে গিয়ে দেখি হাবিবুর রহমান জাহাঙ্গীর ফকির ও নিপাকে চাকু দিয়ে কোপাচ্ছ। আমরা হাবিবুরকে ধাওয়া দিয়ে ধরে ফেলি। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

পিরোজপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সাকিল সরোয়ার বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটার দিকে দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। হীরাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’

ইন্দুরকানি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন ঘাতক হাবিবুর রহমানকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’