টেকনাফে রোহিঙ্গার হাতে রোহিঙ্গা অন্তঃসত্ত্বা নিহত, আটক ৬

কক্সবাজারের টেকনাফে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা যুবকের ছুরিকাঘাতে এক রোহিঙ্গা নারী নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের আলী হোসেন সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আনসার বেগম (৩৫) নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের ডি ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইলিয়াসের স্ত্রী। এ ঘটনায় শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন এবং পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জড়িত ছয়জনকে আটক করেছেন। পরিবার বলছে, নিহত নারী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। অভিযুক্ত ইব্রাহীম (২৫) একই শিবিরের বাসিন্দা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই শরণার্থীশিবিরে মকবুল আহমদ নামে একজন দীর্ঘদিন ধরে মুদির দোকান করে আসছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে ওই দোকানের সামনে সৈয়দ আহমদ নামে এক কবিরাজ অস্থায়ী দোকান বসান। এ সময় মকবুল কবিরাজকে দোকানের সামনে থেকে স্থান পরিবর্তনের জন্য বললে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় কবিরাজের পক্ষে ওই শিবিরের বাসিন্দা ছালেহ আহমদের পরিবার মকবুলের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ছালেহ আহমদের ছেলে ইব্রাহিম উত্তেজিত হয়ে লাঠি ও ছুরি নিয়ে আনসার বেগম ও তাঁর বাবা মকবুল আহমদ ওপর হামলা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আনসার বেগম। এ সময় শিশুসহ আরও পাঁচজন আহত হয়। আহতরা হলেন, মো. রফিক (১০), মো. সোহেল (১২) ; ছালেহ আহমদ (৬২), তার স্ত্রী দিলবাহার (৪২) ও ছেলে ছুরিকাঘাতে অভিযুক্ত মো. ইব্রাহিম। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আনসার বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশ ছালেহ আহমদ, তাঁর স্ত্রী দিল বাহার , ছেলে ইব্রাহিম , ইউসুফ (২২), কবিরাজ সৈয়দ আহমদ (৬৫) ও তাঁর ছেলে মো. হোসেনকে (১৮) আটক করে।

এর মধ্যে আহত ছালেহ আহমদ, দিল বাহার ও ইব্রাহিমকে পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হলেও অপর তিনজনকে টেকনাফ থানা-পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নিহতের ছোট বোন দিল আরা বেগম বলেন, ‘আনসার বেগম চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ও ৫ সন্তানের জননী। এ ঘটনায় আনসারের স্বামী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবেন।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি উদ্ধার করে কক্সবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।