রংপুরে নদীতে বালু তুলতে গিয়ে মিলল 'ট্যাংক'-সদৃশ বস্তু

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর কাচদহ ঘাটে নদী থেকে বালু তুলতে গিয়ে মিলেছে ট্যাংক-সদৃশ এই বস্তু। রংপুর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর কাচদহ ঘাটে নদী থেকে বালু তুলতে গিয়ে মিলেছে ট্যাংক-সদৃশ এই বস্তু। রংপুর, ২৭ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নদী থেকে বালু তুলতে গিয়ে মিলেছে ‘ট্যাংক’-সদৃশ বস্তু। করতোয়া নদীর কাচদহ ঘাটে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন পরিত্যক্ত ট্যাংক-সদৃশ বস্তুটির সন্ধান পায়। বিষয়টি জানার পর শুক্রবার বিকেলেই রংপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হাবিব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুস সাত্তার মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি আসলে একটি ট্যাংক। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় মিত্রবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ট্যাংকটি পার করার সময় নদীতে তা আটকা পড়ে। আমরা যুদ্ধের সময় নদী থেকে ট্যাংকটি উদ্ধারের অনেক চেষ্টা করেও পারিনি।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় ট্যাংক আটকে পড়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মিঠাপুকুর উপজেলার মিলনপুর ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের শাহাদত হোসেন (৬২) বলেন, ‘যুদ্ধের সময় কোনো একদিন দুপুরের দিকে কয়েকটি ট্যাংক ওই নদী দিয়ে পার করা হচ্ছিল। তখন একটি ট্যাংক কাচদহ ঘাটে আটকে পড়ে। এ খবর শুনে তখন আমরা নদীর পাড়ে গিয়ে ট্যাংকটি দেখেছি। তিন দিন পর্যন্ত ট্যাংকটি চালু অবস্থায় ছিল। এ সময় ভারতীয় সেনারা লোহার রশি-শিকল দিয়ে অনেক টানাটানি করেও তুলতে পারেনি ট্যাংকটি। পরে তা নদীতে ফেলেই চলে যায় তারা। তখন আমার বয়স ছিল ১৪-১৫ বছর।’

এদিকে ট্যাংক-সদৃশ বস্তুর সন্ধান পাওয়ার খবরে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বস্তুটি দেখার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকার অসংখ্য মানুষ ওই নদীর তীরে ভিড় করে।

পীরগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাশিদ কায়সার প্রথম আলোকে বলেন, পানির নিচের বস্তুটি ট্যাংক-সদৃশ মনে হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিজিএফআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে। এটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ওই নদীতে পানির নিচে লম্বাকৃতির লোহার একটি বস্তুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি ট্যাংক কি না, তা উদ্ধার না করা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।