ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে চুরির চেষ্টা, টাকার বস্তা ফেলে পালাল চোর

সিসিটিভির ফুটেজ। সিন্দুকের তালা কাটছে মুখোশধারী চোর।
সিসিটিভির ফুটেজ। সিন্দুকের তালা কাটছে মুখোশধারী চোর।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে গতকাল শনিবার রাতে চুরির চেষ্টা হয়েছে। মসজিদের মালখানার গ্রিল ও একটি সিন্দুকের কেটে টাকা বস্তায় ভরে চোর। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত নৈশপ্রহরীর ধাওয়া খেয়ে টাকার বস্তা ফেলে চোর পালিয়ে যায়।

সেই টাকার বস্তা উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেটের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হাকিম আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদের তত্ত্বাবধানে গণনা করা হয়। গণনা শেষে সেখানে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৮১ টাকা ও কিছু স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাভর্তি টাকা, চোরাই কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি লোহার কাটার ও শিক উদ্ধার করে।

নির্বাহী হাকিম আবু তাহের মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, শনিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে মুখোশ পরা এক চোর মসজিদের মালখানার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে। সে একটি সিন্দুকের দুটি তালা কেটে মানুষের দানের জমা পড়া সব টাকা ও স্বর্ণালংকার একটি বস্তায় ভরে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় মসজিদের দুজন নৈশপ্রহরী টের পেয়ে চোরকে ধাওয়া করেন। এ সময় নৈশপ্রহরী মো. শরীফকে লোহার শিক দিয়ে আঘাত করে জখম করে ওই চোর। তখন অপর নৈশপ্রহরী মুকুল মিয়া ধাওয়া করেন চোরকে। তখন চোর টাকার বস্তা ফেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। নির্বাহী হাকিম জানান, টাকা গণনা করে রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে।

মসজিদের সিন্দুক থেকে টাকা বের করে বস্তায় ভরে নেয় চোর। পরে বস্তা ফেলে পালিয়ে যায় চোর। সেই টাকা গণনা চলছে। ছবি: তাফসিলুল আজিজ
মসজিদের সিন্দুক থেকে টাকা বের করে বস্তায় ভরে নেয় চোর। পরে বস্তা ফেলে পালিয়ে যায় চোর। সেই টাকা গণনা চলছে। ছবি: তাফসিলুল আজিজ

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত বলেন, ঘটনার সময়ের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেছে চুরির ঘটনা ও এক চোরকে দেখা গেছে। এখনো চোরের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তবে তাঁকে দ্রুত আটকের চেষ্টা চলছে।

কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল এলাকার নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই মসজিদে দৈনিক প্রায় এক লাখ টাকা দান বাক্সে পড়ে। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও থাকে। এর আগে গত ৩১ মার্চ ৮৪ দিন পর মসজিদের চারটি দান বাক্স থেকে ৮৪ লাখ ৯২ হাজার ৪ টাকা পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তাঁদের মনের আশা পূরণ ও মানতের জন্য মসজিদের দানবাক্সগুলোতে টাকাপয়সা স্বর্ণালংকার দান করেন। কখনো কখনো গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করে থাকেন। এই দানের অর্থ ওই মসজিদ ও মসজিদ-সংলগ্ন এতিমখানার খরচ ছাড়াও বিভিন্ন মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজ, জটিল দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসাসহ সেবামূলক খাতে ব্যয় করা হয়ে থাকে।