প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত চলবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি

কোটার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তবে আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা এবং কিছু কিছু ক্লাস হয়েছে। আবার কেউ কেউ ক্লাস বর্জনও করছেন।

কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলনকারীরা গতকাল সোমবার ছয় ঘণ্টা শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এরপর সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের কথা জানিয়ে তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে জানান, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখা হবে।

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা চলছে। কোথাও কোথাও মৌখিক পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিভাগের সামনে অপেক্ষা করছেন।

ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ চৌধুরী বলেন, ‘একটু পর আমার ক্লাস শুরু হবে। কিছুদিন পর পরীক্ষা। স্যার অনুরোধ করেছেন ক্লাস করার জন্য।’ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা হোসেন ক্লাস করছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা বর্জনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে স্যারদের বলেছি ক্লাস করব না।’ তবে তিনি জানান, পরীক্ষা চলছে।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের পরীক্ষা চলতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগের ক্লাসও হয়েছে। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদা নেওয়াজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। তবে জানালেন, ক্লাস হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অনেকেই আড্ডা দিচ্ছেন। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম হোসেন বলেন, সেমিস্টার শেষের দিকে হওয়ায় অনেক বিভাগেরই ক্লাস শেষ। পরীক্ষাও চলছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী এসেছেন ক্লাস নোট নিতে বা নিজেদের বিভিন্ন কাজে।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব শিক্ষক আমাদের সাপোর্ট করছেন, তাঁরা বর্জন করছেন। কিন্তু যাঁরা সাপোর্ট করছেন না, তাঁরা ছাত্রসমাজের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এ কাজ করছেন।’ তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বস্ত লোকের মাধ্যমে জানিয়েছেন, খুব দ্রুতই কোটার ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। কোটা বাতিল বা সংস্কারের বিষয়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি হবে। রাশেদ বলেন, ‘আমরা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করেছি, যদি তা হয় তাহলে তো ভালোই। আর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাতিল হলে সেটাকেও সাধুবাদ জানাই।’

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।