সীতাকুণ্ডে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ফটক ভেঙে সড়ক উন্মুক্ত করলেন ইউএনও

ভেঙে ফেলার আগে ফটকের সামনে ইউএনও তারিকুল আলম ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীসহ অন্যরা। আম্বিয়ার ঢালা, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, ১৭ মে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস
ভেঙে ফেলার আগে ফটকের সামনে ইউএনও তারিকুল আলম ও স্থানীয় চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীসহ অন্যরা। আম্বিয়ার ঢালা, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, ১৭ মে। ছবি: কৃষ্ণ চন্দ্র দাস

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকায় রাজা আম্বিয়ার ঢালা সড়কের মুখে দেওয়া কবির স্টিল রিরোলিং মিলসের (কেএসআরএম) একটি পার্শ্ব ফটক ভেঙে দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। বৃহস্পতিবার বিকেলে এলাকাবাসীর জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। 

সড়কটির ওপর টিন দিয়ে ফটক নির্মাণ করে সেখানে তালাবদ্ধ রেখেছিল ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে গ্রামের লোকজন পাহাড়ে তাদের খেতখামারে যেতে পারত না বলে অভিযোগ। এর আগে ফটকটি খুলে দিতে দুই দফা মানববন্ধন করেছিল স্থানীয়রা। তারা গত বুধবার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়। দুই মাস আগে ওই ফটকটি দেওয়া হয় বলে জানা যায়।

ইউএনও বলেন, ঘটনাস্থলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে অসহযোগিতা করেছেন। অপরদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই জমি তাদের কেনা। ফলে ফটক ভাঙা নিয়ে তাদের আইনগত প্রশ্ন রয়েছে।

ইউএনও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে তিনি কেএসআরএম এর ওই ফটকের কাছে যান। এ সময় ফটকটি খুলে দিতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফটকের বাইরে বসে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ফটকটি খোলার জন্য পাঁচ মিনিট সময় দিয়ে তিনি ভেতরে যাবেন বলে জানান। তবুও না খোলায় ৪০ মিনিট অপেক্ষার পর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সড়কের ওপর থাকা ফটকটি ভাঙার নির্দেশ দেন। এ সময় ঘটনাস্থলে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান, পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেলহকসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই এলাকার পাহাড়ি বাগান মালিক সমিতির সভাপতি জয়নাল আবদিন প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটি খুলে দেওয়ায় তাদের সমিতির তালিকাভুক্ত ২৫০ জন কৃষকসহ অন্যান্য কৃষকেরাও খুবই খুশি। তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে।

ইউএনও তারিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন সড়কটি দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে মানুষ চলাচল করত। সেটি কারখানা কর্তৃপক্ষ আটকে দেয়। অভিযোগ পেয়ে তিনি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান সড়কটিতে গিয়ে ফটকটি জনগণের চলাচলের জন্য খুলে দিতে বলেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ খুলে না দিয়ে তার সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করায় তিনি থানা-পুলিশের সহযোগিতা চান। পুলিশ আসার পর তিনি তার লোকজনকে ফটকটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এ সময় আনসার সদস্যদের ভূমিকাও নেতিবাচক ছিল। সেখান থেকে আনসার তুলে নিতে ও দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন বলে জানান।

জানতে চাইলে কেএসআরএম এর উপমহাব্যবস্থাপক শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ইউএনওকে তারা ভেতরে প্রবেশে বাধা দেননি। কারখানার মালিকানাধীন একটি সড়ক মানুষের জন্য খুলে দেওয়ার পর কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? কোন আইনে ইউএনও ফটক ভাঙলেন তা তার জানা নেই।