যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর শরীরে আগুন!

দগ্ধ ফাতেমার (২৬) বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসকেরা। অভিযোগ, যৌতুকের জন্য স্বামী আলাউদ্দিন তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, শ্বাসনালিসহ শরীরের ৩৩ শতাংশ পুড়ে যাওয়া ফাতেমার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ফাতেমার বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায়। সোমবার তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর আগে তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত শুক্রবার আলাউদ্দিন তাঁকে আগুনে পুড়িয়ে দেন।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে কথা হয় দগ্ধ ফাতেমা ও তাঁর মা বিবি মালেকার সঙ্গে। ফাতেমা এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী।

মালেকা বেগম বলেন, ‘প্রথম রোজার দিন বিকেলে (শুক্রবার) যৌতুকের জন্য জামাই আমার মেয়েরে মারধর করে, গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল ভর্তি করে। পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ আলাউদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।’

ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ফাতেমা বলেন, ‘যৌতুকের জন্য প্রায় সময় মারধর আলাউদ্দিন করত। প্রায় ১২ বছরের সংসার। বিয়ের পর প্রায় চার পাঁচ বছর ভালোই কাটে। এরপর আলাউদ্দিন চট্টগ্রাম যায়। সেখানে সে ইজিবাইক চালাত। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসত। শুনছি, সেখানে সে বিয়ে করেছে। এর মধ্যে গ্রামের বাড়িতে সে একটা দোকান দেয়। আমিই দোকান চালাতাম। দোকান দেওয়ার আগে বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা এনেছি। সমিতি থেকেও টাকা এনে দোকানে মালামাল তুলি।’

ফাতেমা বলেন, ‘এভাবে আমি টাকা জোগাড় করার পরও আলাউদ্দিন বুঝতে চাইত না। খালি বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলত। এতে আমি প্রতিবাদ করতে চাইলে মারধর করত। একবার থানায় তার নামে সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলাম। ঘটনার দিন সে আমাকে মারধর করে, বুকে পাড়া দেয়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি নাই। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারি আমার শরীরে আগুন জ্বলছে। পরে কোনো রকম উঠে বাড়ির পাশে পুকুরে ঝাঁপ দিই।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল বলেন, ফাতেমার মুখমণ্ডলসহ শরীরের ৩৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে।