অভিযান এমন একটা সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন সামনে নির্বাচন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আতঙ্কের পাশাপাশি এর উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

আজ বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাড়িতে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে সরকার যেভাবে এটাকে (ক্রসফায়ার) প্রয়োগ করছে, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সিভিল সোসাইটিতে, রাজনৈতিক মহল এবং দেশের মানুষের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযান এমন একটা সময়কে বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন সামনে নির্বাচন আসছে। এই সময়ে কোনো এক যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এমন একটা অবস্থা চলছে। অল্প দিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩০ জনকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় তাদের সম্পর্কে কথাবার্তাও উঠে এসেছে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে এক ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে তার কাছ থেকে ডিবি পুলিশ টাকা দাবি করে। ছেলেটির মা বলেছেন, পুলিশের দাবির টাকা দেওয়ার পর ডিবি পুলিশ ছেলেটিকে ছেড়ে দেয়। পরে থানা-পুলিশ আবার ওই ছেলেটিকে আটক করে টাকা দাবি করে। পরে ওই ছেলের মুক্তির জন্য পুলিশকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও সেই ছেলেটিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। নেত্রকোনায় ছাত্রদলের এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, যে কখনো সিগারেট পর্যন্ত খেত না।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ সারা বাংলাদেশে এ নিয়ে একদিকে যেমন প্যানিক (ভীতি) তৈরি হয়েছে, আর একদিকে এর (মাদকবিরোধী অভিযান) উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। জানি না, এটা শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যাবে। কারণ সরকার বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও মাদকবিরোধী অভিযান চাই। তবে সেটা নন-পলিটিক্যাল চাই। ক্রসফায়ারের পেছনে যে যুক্তি খাঁড়া করা হচ্ছে, সেই যুক্তিগুলো একটা সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে যুক্তি বলে বিবেচিত হওয়ার কথা নয়।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুর নির্বাচনের পুরো বিষয়টি একটা গোলকধাঁধার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গাজীপুরে যে এসপি দায়িত্বে আছেন, সেই এসপি একজন চিহ্নিত আওয়ামী লীগার। তাঁকে রেখে সেখানে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের ব্যবস্থাটাকেই পুরোপুরি প্রহসন, নাটকে পরিণত করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন তো অনেক দূরে, গাজীপুর নির্বাচন নিয়েও আমরা ভাবছি এখানে কী ব্যবস্থা নেব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে সরকার এত বেশি ভয় পাচ্ছে যে তারা তাঁকে জেলের বাইরে আনতে সাহস পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নিজেরাই চায় না বিরোধী দল নির্বাচনে আসুক। কারণ বিরোধী দল নির্বাচনে না এলে তাদের সুবিধা আছে, ২০১৪ সালের মতো তারা নির্বাচন করে ফল নিয়ে যাবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন সংগত হবে না, বৈধ হবে না। তিনি গণতন্ত্রের নেত্রী। তাঁকে জেলে রেখে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।