বাগেরহাট-৩ আসনের সাংসদ হতে যাচ্ছেন হাবিবুন

হাবিবুন নাহার
হাবিবুন নাহার

বাগেরহাট-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হাবিবুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেতে যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জমা দেওয়ার শেষ দিনে হাবিবুন নাহার একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এ সময় তাঁর স্বামী খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মীর শওকাত আলী বাদশা, সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকুসহ দলীয় নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

২৭ মে যাচাই–বাছাই এবং ৩ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ধার্য রয়েছে। সেই হিসেবে ৪ জুন হাবিবুন নাহারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।

২২ মে জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে হাবিবুন নাহারের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর তালুকদার আবদুল বাকী।

এই আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী চলচ্চিত্র নায়ক ও ব্যবসায়ী মো. শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খান তাঁর সংগ্রহ করা মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

রামপাল ও মোংলা এই দুই উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদের ৯৭ আসন বাগেরহাট-৩। এর আগে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য স্পিকারের কাছে সংসদ সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন তিনি। এরপর স্পিকার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিলে ১০ এপ্রিল আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।

২১ মে এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় সাবেক সাংসদ হাবিবুন নাহারকে। এর আগে তিনি ২০০৮ সালে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুন নাহার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিগত দিনেও এই আসনের সাংসদ ছিলাম। এই আসনে আবার নির্বাচিত হলে আমার অসমাপ্ত কাজ শেষ করব।’ এলাকার মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে, তার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও বাগেরহাট-৩ উপনির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাট-৩ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হাবিবুন নাহার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশন থেকে সংগ্রহ করা দুটি মনোনয়নপত্রের মধ্যে একটি জমা পড়েছে। এই আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাকিল আহসান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তিনি তা জমা দেননি। ফলে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হাবিবুন নাহারের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তাঁর জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রে কোনো ত্রুটি না থাকলে তিনি এই আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে চলেছেন। আগামী ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করা হবে।

নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে কেন তা জমা দিলেন না, তা জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী চলচ্চিত্র অভিনেতা মো. শাকিল আহসান ওরফে শাকিল খান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত নই। তবে আমি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করি। আমার বাড়ি রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা গ্রামে। আমার পিতৃভূমির সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শূন্য হওয়া আসনে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু গত ২০ মে বাগেরহাট-৩ আসনের শূন্য পদের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে গণভবনে ডেকে ভবিষ্যতে রাজনীতির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলায় আমি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আমার সংগ্রহ করা মনোনয়নপত্রটি জমা না দিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী হাবিবুন নাহারকে সমর্থন জানাচ্ছি।’

আগামী ২৬ জুন এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। রামপাল ও মোংলা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন গঠিত। এখানে নারী–পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ২৪৯ জন।