রাজশাহীর মাটিতে বিদেশি রঙিন আম

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের নতুন জাতের আম।   প্রথম আলো
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের নতুন জাতের আম। প্রথম আলো

পাকতে এখনো দেড় মাস দেরি। এরই মধ্যে গায়ে লেগেছে বাহারি রং। উজ্জ্বল মেরুন। এই আমের নাম এখনো ঠিক হয়নি। তবে জাতের নাম জানা গেছে। টমিএটকিনস। বিদেশি জাত। এসেছে সৌদি আরব থেকে। গত সাত বছরে এই জাতের পাঁচটি গাছ বেড়ে উঠছে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে।

গবেষকেরা বলছেন, খেতে সুস্বাদু এই আম বিশ্ববাজারে রপ্তানিযোগ্য। এই আমকে জাত হিসেবে মূল্যায়নের জন্য এবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলীম উদ্দীন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফল গবেষণা কেন্দ্রের একসময়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা ‘লিয়েনে’ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আমবাগান নিয়ে গবেষণার কাজ করতেন। ফেরার সময় তিনি ‘টমিএটকিনস’ জাতের আমগাছের ডগা (সায়ন) সংগ্রহ করে আনেন। দেশে ফিরে তিনি সেটি রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে দেন।

আলীম উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপযোগী রপ্তানিযোগ্য রঙিন আমের জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে সাত বছর ধরে গবেষণা চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশে গুটি আমের জাতের সঙ্গে কয়েকটি কলম করা হয়। যার মধ্যে জাত হিসাবে ছাড়করণযোগ্য একটি আম পাওয়া যায়। পূর্ণবয়স্ক এই আমের রং আকর্ষণীয় হলুদাভ-মেরুন বর্ণের হচ্ছে।

যদিও আম আসার শুরুতেই এর রং হালকা মেরুন বর্ণের হয়। গড়ে প্রতিটি ফলের ওজন ৪৪০ গ্রাম। এর ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৬ শতাংশ। গড় মিষ্টতা (টিএসএস) ১৯ শতাংশ। আমটি লম্বায় ১০ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ও প্রস্থ ৮ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার। খোসা পাতলা ও মাংসল। আলীম উদ্দীন বলেন, বিশ্ববাজারে এই আমের বাজার পাওয়া যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন। আগামী জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংগ্রহ করা যাবে এই আম। দেশি সব জাতের আম যখন প্রায় বাজারে ফুরিয়ে আসবে, সেই সময় এই আম বাজারে নামবে। তখন ভালো দামও পাওয়া যাবে।

গত শনিবার রাজশাহী আম গবেষণা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আট-দশ ফুট উচ্চতার পাঁচটি গাছে এই আম ধরেছে। বাহারি রঙের এই আম যে কারও নজর কাড়বে। গাছের বেশির ভাগ আমে ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ করা হয়েছে। যে কটি আম বাইরে রয়েছে সেগুলোর রং আকর্ষণীয়। তবে ব্যাগের ভেতরের আম ততটা আকর্ষণীয় রঙের হচ্ছে না।