ঈশ্বরগঞ্জে শয়নকক্ষে স্ত্রীর লাশ, স্বামী পলাতক

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় শ্বশুরবাড়ির শয়নকক্ষের শয্যা থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ওই গৃহবধূর স্বামী পলাতক। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রাম থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত গৃহবধূর নাম মোছা মুর্শিদা খাতুন (২৫)। তিনি মহেশপুর গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে মো. জহিরুল ইসলামের (৩২) স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কুমুরিয়ার চর গ্রামে। বাবার নাম মো. আবদুল মোতালেব। মুর্শিদা খাতুনের পরিবারের দাবি, স্বামী জহিরুল তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পালিয়েছেন।

পুলিশের ধারণা, গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর মুর্শিদার স্বামী জহিরুল বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

মুর্শিদার দাদা মো. আবদুর রাশিদ বলেন, পাঁচ বছর আগে জহিরুলের সঙ্গে মুর্শিদার বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে মো. তানিম (৩) নামের এক পুত্রসন্তান রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে নানাভাবে মুর্শিদার কাছ থেকে টাকা চাইতেন জহিরুল। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতন চালাতে দ্বিধা করতেন না।

মুর্শিদার শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার সাহ্‌রির সময় মুর্শিদার সঙ্গে জহিরুলের তর্ক হয়। তাঁদের শিশুপুত্র তানিম দাদির কাছে ঘুমায়। সে জেগে উঠে মায়ের কাছে যেতে চায়। তবে মা-বাবার কক্ষের দরজা ভেতর থেকে ভেজানো থাকায় শিশুটি দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ সময় অন্যরা মুর্শিদাকে ডাকাডাকি করে তানিমকে ভেতরে নিতে বলে। তবে সাড়া না পেয়ে মুর্শিদার ছোট বোন মদিনা খাতুন ভেজানো দরজা ঠেলে ভেতরে গিয়ে দেখেন, বোনের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ও নাক-কান বেয়ে রক্ত পড়ছে। তাঁর চিৎকারে লোকজন ছুটে আসে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, পারিবারিক কলহ ছাড়াও কয়েক দিন ধরে জহিরুল স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা দাবি করে আসছিলেন। চাহিদামতো টাকা না পেয়ে জহিরুল তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করতে পারেন বলে মুর্শিদার বাবার বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেছে। পুলিশ সবকিছু খতিয়ে দেখছে।

জহিরুলের বাড়িতে কেউ না থাকায় এ অভিযোগ প্রসঙ্গে কারও বক্তব্য জানা যায়নি।