মরে যাচ্ছে সংসদ ভবনের ফিশটেইল পামগাছগুলো

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ফিশটেইল পামগাছগুলো উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে মরে যাচ্ছে।  প্রথম আলো
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ফিশটেইল পামগাছগুলো উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে মরে যাচ্ছে। প্রথম আলো

সংসদ ভবনের সামনের দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সৌন্দর্যবর্ধনে ফুটপাতের কিনার দিয়ে লাগানো সারিবদ্ধ ফিশটেইল পামগাছগুলো একসময় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করত। এর অনেক গাছ বিভিন্ন সময় মরে গেছে। এখন আছে ১৩৮টি। এর মধ্যেও ৮টি গাছ মরে গেছে এবং কয়েকটির পাতা শুকিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপযুক্ত পরিচর্যার অভাব আর বয়সের কারণে এমন হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর ফুটপাত বরাবর লাগানো ফিশটেইল পামগাছের আটটি মরে গেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু গাছের অধিকাংশ পাতা শুকিয়ে গেছে। যে গাছগুলো বেঁচে আছে, সেগুলোর অবস্থা শোচনীয়। গাছগুলোর মাথায় বটগাছ কিংবা ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদ জন্মেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, যেন পামগাছে বটগাছের পাতা গজিয়েছে। গাছগুলোর যে পরিচর্যা হয় না, এ থেকে তা স্পষ্ট।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের চাকরিজীবী হ‌ুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, অফিস শেষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এসে তাঁরা কয়েক বন্ধু নিয়মিত আড্ডা দেন। আগে এই জায়গায় পামগাছের সারিটি অন্য রকম এক শোভা বর্ধন করত। দিনে দিনে গাছগুলো মরে যাওয়ায় পরিবেশটা আগের মতো নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আরবরিকালচার বিভাগের একজন উদ্যানবিদ প্রথম আলোকে জানান, এ গাছগুলো আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দেখত। এখন উত্তর সিটি করপোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ উভয়ে দেখে থাকে। দায়িত্ব ভাগ হওয়ার পর সড়কের পাশের গাছগুলোর দেখভালের দায়িত্ব পড়েছে ডিএনসিসির। তাদেরই পরিচর্যা করার কথা। তবে এই ফিশটেইল পামগাছগুলোর মৃত্যুর আরেকটি কারণ বয়স হয়ে যাওয়া। এগুলো লাগানো হয়েছিল গত শতকের আশির দশকে। এ ধরনের গাছ ২০-২৫ বছর বেঁচে থাকে।

 এ বিষয়ে জানতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক বিন ইউসুফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এই গাছগুলো আমাদের আওতার মধ্যে নয়। এগুলো সড়ক ও জনপদ বিভাগের আরবরিকালচার দেখে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পামের মধ্যে কিছু জাত আছে। একবার ফুল দেওয়ার পরে মারা যায় আর কিছু একাধিকবার ফুল দিতে পারে। ফিশটেইল জাতের পামগাছের ক্ষেত্রে ফুল হওয়ার পরে সাধারণত মারা যায়। সে ক্ষেত্রে ফুল ফোটার আগেই পুষ্পমঞ্জরি কেটে দিতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব গাছের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। পরিচর্যা অভাব ও পরজীবীর আক্রমণে এসব গাছের মৃত্যু ঘটে।