এমপিওভুক্তির আন্দোলনে বাধা, মিলল শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস

শিক্ষক–কর্মচারীদের কর্মসূচিতে রোববারও বাধা দেয় পুলিশ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
শিক্ষক–কর্মচারীদের কর্মসূচিতে রোববারও বাধা দেয় পুলিশ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা লাগাতার অবস্থান নিতে চাইলে আবারও বাধা দিয়েছে পুলিশ। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁরা অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার উত্তর পাশে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান নেন।

অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই শিক্ষকদের রমজান মাসে কষ্ট করে আন্দোলন না করতে অনুরোধ জানান। বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। এ বিষয় কাজও চলছে। তাই শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রয়োজন নেই।

আজ সোমবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাজেটে অনেক বিষয়ে উল্লেখ করে দেওয়া নেই। এটা জরুরি বিষয়ও নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা ফয়সালা করে এমপিওভুক্ত করা হবে। তবে কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে করা হবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এমপিওভুক্তির দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা আজ সকাল ১০টার পরপরই প্রেসক্লাবের সামনে আসতে থাকেন। বেলা ১১টার আগে আগে তাঁরা পল্টনের দিক থেকে প্রেসক্লাবের সামনে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সেখানে বাধা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর তাঁরা প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার উত্তর পাশে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর তাঁরা আবার প্রেসক্লাবের সামনে আসতে চাইলে পুলিশ আবারও বাধা দেয়।

বাধার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেসক্লাব এলাকায় দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার টহল পুলিশের পরিদর্শক শেখ আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, অনুমতি না থাকায় তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে। অনুমতি নিয়ে এলে কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, পুলিশের অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী বলেন, তারা এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। তাঁরা চান স্বীকৃতি পাওয়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হোক।

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাঁর তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এরপর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, আসন্ন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।

কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে তিনি নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুষ্পষ্ট কিছু বলেননি।

এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের জন্য ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে খাতওয়ারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। তবে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজ নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।