ইয়াবা পাচার রোধে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে না, সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, ইয়াবা পাচার রোধে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ে মিয়ানমার বাংলাদেশকে কোনো সহযোগিতা করছে না। মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাবে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে তিনটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মিয়ানমারকে ইয়াবার উৎপাদন ও প্রবাহ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত ইয়াবা তৈরির কারখানা সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।

মাদক বিষয়ে সরকারি দলের আরেক সাংসদ পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে/কর্তৃত্বে/অধিকারে মাদক পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই। ফলে মাদক ব্যবসায় জড়িত ‘মাস্টারমাইন্ড’রা (মূল পরিকল্পনাকারীরা) সহজেই পার পেয়ে যায়। মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী, মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক, মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৮৩ জন মাদক ব্যবসায়ী বিরুদ্ধে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৩৬টি মামলা করা হয়েছে। এ সময়ে ৪ কোটি ৭৯ হাজার ৪৪৩টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ২৭ হাজার ৩৪০টি মামলায় ৩৫ হাজার ১১২ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬১১টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির সাংসদ হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত বছর ১২ হাজার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন অভিযোগে ৫ হাজার ৯৯১টি মামলা করা হয়েছে। ৬ হাজার ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৭৬০ টাকা অর্থদণ্ড ও ৬ হাজার ৫৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী আরও জানান, এ বছর মে মাস পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৫৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২ হাজার ৪১৬টি মামলা করা হয়েছে। এ সময় ২ হাজার ৪৪৮ জনকে গ্রেপ্তার, ১৭ লাখ ১২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও ২ হাজার ৬৫৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

৪ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ অর্থনৈতিক কর্মে জড়িত নয়
সরকারি দলের সাংসদ ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে লেবার ফোর্স সার্ভের উদ্ধৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, কোনো ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত নন—দেশে এমন জনশক্তির সংখ্যা ৪ কোটি ৫৮ লাখ। দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৬ কোটি ৮ লাখ কর্মে নিয়োজিত এবং ২ কোটি ৭০ লাখ বেকার।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যার হার ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ। এ ছাড়া ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়স পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি ৪ দশমিক ৬ শতাংশ জনসংখ্যা রয়েছে।