সরকারের কাছে খালেদার মুক্তির দাবি মামাবাড়ির আবদার: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে চিকিৎসা করানোর বিষয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই দাবিটা বিএনপি করুক। যদি জেলকোড অনুযায়ী তাঁর চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর প্রয়োজন হয়, তাহলে পাঠাবে।

ঢাকার লেডিস ক্লাবে আজ সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত দিচ্ছেন। কার কাছে শর্ত দিচ্ছেন? কে তাঁকে মুক্তি দেবে? কে তাঁকে দণ্ড দিল? আদালতে যান। তিনি বলেন, সরকারের কাছে শর্ত দিয়ে লাভ নেই। সরকার তাঁকে জেলে নেয়নি। সরকার তাঁকে দণ্ড দেয়নি। সরকার তাঁকে মুক্তি দিতে পারে না। আদালতের সিদ্ধান্তই হচ্ছে তাঁর মুক্তির বিষয়ে শেষ কথা।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে সরকারের কোনো করণীয় নেই। সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি মামাবাড়ির আবদার। এই আবদারটা না করলেই হয়। এটা অপ্রয়োজনীয়, অপ্রাসঙ্গিক ও অবাস্তব। আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা সম্পূর্ণভাবে আদালতের এখতিয়ার।’

লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকেরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার, এটা নিয়ে মন্তব্য নেই। মন্তব্য হচ্ছে, পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে দেখা করা কি গণতন্ত্র? পলাতক আসামি কি কোনো দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন?

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের তাঁর বক্তব্যে নিজের সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘মওদুদ সাহেব আমার নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে কিছু কথা বলেছেন। তাঁর দল সেখানে দু-তিন ভাগে বিভক্ত। তিনি গেলেই সেখানে মারামারি অনিবার্য। তাঁর ঘরের মধ্যে দুই পক্ষ মারামারি করে। এখন পুলিশ দিয়ে তাঁর নিরাপত্তা দিতে গেলে বলে পুলিশ নাকি তাঁকে ঘিরে রাখে। অনেক দিন পেছন পথে এলাকা ত্যাগ করেছেন এই মওদুদ। মওদুদ সাহেব ঢাকার পল্টনের অফিসে বসে মিথ্যাচার করেন, মিথ্যাচারের রাজনীতি করেন। ২২ বছরে দুটি কাজও করেননি, যেটা মনে করে আপনাকে এলাকার লোক ভোট দিতে পারে। এলাকার লোকজন আপনার প্রতি ক্ষুব্ধ। আপনি দলের লোকদের বিভক্ত করে রেখেছেন।’ মওদুদ আহমদের সারা জীবন মিথ্যাচারের রাজনীতিতে পরিপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।