যাত্রী পূর্ণ হলে সময়ের আগেই ছাড়ছে অনেক লঞ্চ
বিলকিস বেগম যে লঞ্চে যাবেন, তা ছাড়ার কথা রাত পৌনে আটটায়। তিনি যাবেন ঝালকাঠি। থাকেন রাজধানীর ধানমন্ডি-১৪-তে। কিন্তু বেলা ১১টার মধ্যেই তিনি সদরঘাটে এসে হাজির।
এত আগে চলে আসা কেন? প্রশ্নের উত্তরে বিলকিস বললেন, ‘ঢাকার রাস্তায় যে জ্যাম। ঠিকমতো আসতে পারব কি না কে জানে। তারপর শুনছি, যাত্রী ভরলেই লঞ্চ ছাইড়া দ্যায়। কোনো টাইমটেবিল নাই।’
বিলকিস জানান, ঢাকার রায়সাহেব বাজর ও সদরঘাটে যানজটে পড়তে হয়েছে তাঁকে। তারপরও সদরঘাটে আসতে পেরে খুশি। ঈদে বাড়ি ফেরা বলে কথা। তাই কোনো ঝুঁকি নেননি বিলকিস বেগম। পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ফাহান-৭ লঞ্চের ডেকে বসে আছেন।
বিলকিস বেগম যেমনটা বলছিলেন, আজ সদরঘাটে তেমনটাই ঘটছে। শুধু যাত্রী পূর্ণ হলেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে লঞ্চগুলো। বলা যায় বাধ্য করা হচ্ছে। সদরঘাটে যাতে কোনো ধরনের জট সৃষ্টি না হয়, সে জন্যই এ তৎপরতা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক শফিকুল হক বলেন, ‘লঞ্চে যাত্রী পূর্ণ হলেই আমরা লঞ্চ ছেড়ে দিচ্ছি। অকারণে ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়েছে ৪১টি। সকাল থেকে বেশির ভাগ লঞ্চে যাত্রী ছিল প্রচুর। এর মধ্যে ১৭টা লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের আগেই ছেড়ে গেছে।
ইমরান হোসেন থাকেন মাদারটেকে। যাবেন বরগুনা। সদরঘাটে আসতে গিয়ে সদরঘাট এলাকায় যানজটে পড়তে হয়েছে বলে জানান। সন্ধ্যায় লঞ্চ। তারপরও যাত্রা ‘নিশ্চিত’ করতে আগাম চলে আসা। ইমরান বললেন, ‘টিকিটের দাম বেশি নেয় নাই। এবার এই ঝামেলায় পড়ি নাই।’
আজ টিকিটের দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেল না সদরঘাটে।
সদরঘাট টার্মিনাল নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘যাত্রীদের হয়রানি ও নিরাপত্তায় পুলিশ তৎপর আছে। বুড়িগঙ্গায় যাতে নৌকায় থেকে কেউ লঞ্চে না উঠতে পারে, সে জন্য পুলিশ সজাগ আছে।’
আজ সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত যাত্রীদের ভিড় ছিল প্রচুর। এরপর কিছু কমে আসে। দুপুর ১২টার পর আবার যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। দিন যত গড়াবে, সদরঘাট তত ভরে উঠবে উৎসবে ব্যাকুল যাত্রীর পদভারে।