কমলাপুর ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেনই যাত্রীতে ঠাসা

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠছেন। ছবি: দীপু মালাকার
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠছেন। ছবি: দীপু মালাকার

ঈদের আগে আজ বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস। অনেকে অফিসে হাজিরা দিয়েই পরিবার নিয়ে চলে এসেছেন কমলাপুর রেলস্টেশনে। ঈদযাত্রার পঞ্চম দিনে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় কমলাপুর স্টেশনে। সকাল থেকে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেনই যাত্রীতে ঠাসা।

সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছে ২৫টি ট্রেন। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী কয়েকটি ট্রেনের বিলম্ব আনন্দযাত্রায় বিষাদ ছড়িয়েছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। আজ পাঁচটি বিশেষ ট্রেনসহ মোট ৬৯টি ট্রেন ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ছেড়ে যাওয়ার সময় সকাল সোয়া নয়টা। কিন্তু দুপুর ১২টাতেও ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে আসেনি। ওই ট্রেনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরা।

চিলাহাটির নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল আটটায়। যাত্রীদের অনেকে ভোর থেকেই স্টেশনে এসে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন। বেলা পৌনে ১১টায় ট্রেনটি কমলাপুর আসে। তখনো সেটি যাত্রীতে পূর্ণ। বিমানবন্দর স্টেশন থেকেই অনেক যাত্রী ট্রেনে উঠে বসে আছেন। ট্রেনে উঠতে গিয়ে যাত্রীদের বেশ বেগ পেতে হয়। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যায়।

স্ত্রী-সন্তানসহ ভোরে স্টেশনে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হামিদুর রহমান। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সড়কে দেরি হবে ভেবে ট্রেনের টিকিটি কাটলাম। সেটিও তিন ঘন্টা দেরি। সৈয়দপুর পৌঁছাতে রাত নয়টার মতো বেজে যাবে। রাতে যানবাহন পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে।’

খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা বিলম্ব হয়ে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে ৭টা ২৫ মিনিটে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ৫৫ মিনিট দেরি করে ছেড়েছে।

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠছেন। ছবি: দীপু মালাকার
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠছেন। ছবি: দীপু মালাকার

সকাল নয়টায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি দেড় ঘণ্টা দেরি করে সকাল সাড়ে ১০টায় স্টেশন ছেড়ে যায়। দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন আধা ঘণ্টা দেরি করেছে। ট্রেনটি সকাল ১০টার পরিবর্তে সাড়ে ১০টায় ছেড়ে যায়। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা, সেটি ছেড়েছে ২০ মিনিট পর।

কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, সকালে পাঁচটি ট্রেন ছাড়া বাকিগুলো সময়মতো ছেড়ে গেছে। ধূমকেতু, সুন্দরবন ট্রেন দুটি দেরি করে স্টেশনে এসেছে। এগুলো ছাড়তেও দেরি হয়েছে। যাত্রীদের চাপে একটি কোচে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, এ কারণে রংপর এক্সপ্রেস ট্রেন দেরি করে ছেড়েছে।

সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, রেলের সময়সূচি অনুযায়ী গাড়িতে উঠতে যে সময় লাগে, নামার সময় এর চেয়ে বেশি সময় লাগে। এখন সে সময়ে হচ্ছে না। যেখানে দুই মিনিট সময় দেওয়া আছে, সেখানে ১০ মিনিটও লেগে যায়, যার প্রভাবটা পড়ে।