মিয়ানমার ১০ দফায় বাংলাদেশকে প্রায় ১৪০০ রোহিঙ্গার তালিকা ফেরত দিয়েছে

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির। ছবি: প্রথম আলো
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির। ছবি: প্রথম আলো

যাচাই-বাছাই শেষে ১০ দফায় বাংলাদেশকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ রোহিঙ্গার তালিকা ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার। আজ বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ৩৪২ জন রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আজ বিকেলে এই প্রতিবেদককে জানান, প্রায় চার মাসে আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের কাছে ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকায় দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বাংলাদেশ ১ হাজার ৬৭৩টি পরিবারের ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার প্রথম তালিকা মিয়ানমারকে দিয়েছিল।
দুই দেশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকা দেওয়া হয়নি, মিয়ানমারের এমন অভিযোগের পর নতুন করে আর কোনো তালিকা পাঠায়নি বাংলাদেশ। মিয়ানমার বলছে, তালিকায় যাদের নাম পাঠানো হবে, প্রত্যাবাসনে রাজি আছে এই শর্তে রোহিঙ্গাদের সই যুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশের নিশ্চয়তা পাওয়ার আগে, এই শর্তে কারও সই নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রশ্ন আছে। তাই মিয়ানমারে কাছে যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে কোনো সই থাকছে না। তালিকা নিয়ে এ সমস্যাটি সুরাহার জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে এ বিষয়টি সুরাহার আশা করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব ব্যাংক থেকে অনুদান নেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাংক ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিতে আগ্রহী। প্রথম ধাপে বিশ্বব্যাংক দেবে ২০০ মিলিয়ন ডলার। এই অর্থ চিকিৎসা, শিক্ষা, পানি ও পয়োনিষ্কাশন এবং অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে বলে তিনি জানান।
আজকের আলোচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ নিয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরার পর পররাষ্ট্রসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে শুধু অনুদান নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। রোহিঙ্গাদের জন্য কোনো ঋণ নেওয়া যাবে না।
গত এপ্রিলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনার সময় তাঁদেরকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কে জানান।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলার কারণে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ ছাড়া ২০১৬ সালের আগস্টে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে আরও ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা। দুই দফায় আসা এসব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে একটি প্রত্যাবাসন চুক্তি সই করেছে।