বৈধতা নিয়ে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা!

শুক্রবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার ব্যক্তি সম্পর্কে জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
শুক্রবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার ব্যক্তি সম্পর্কে জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর মহাখালী থেকে মোহাম্মদ আলী বাবুল ওরফে মো. বাবুল মিয়া (৫৭) নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিসিটিসি) ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ। তাঁর কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, তাঁর আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ ডিলারশিপ ছিল। তবে তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র ও গুলির বৈধ কাগজপত্র নেই। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, পয়েন্ট ২২ বোরের একটি রাইফেল, এক নলা বন্দুক চারটি, পয়েন্ট ২২ বোরের পিস্তল ২টি, ৭ পয়েন্ট ৬৫ বোরের পিস্তল ১টি, পয়েন্ট ৩২ বোরের রিভলবার ২টি ও ১১৮৫ রাউন্ড গুলি।

আজ শুক্রবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাবুল মিয়াকে গত ১১ জুন মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে একটি পিস্তল, একটি রিভলবার এবং ১২৫ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহের চরখাই এলাকায় তাঁর বাড়ি থেকে বৈধ কাগজপত্রবিহীন বাকি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মোট ১০টি অস্ত্র ও ১১৮৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে তাঁর কাছ থেকে।

রাজধানীর মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার মো. বাবুল মিয়ার (৫৭) কাছ থেকে ১০টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার মো. বাবুল মিয়ার (৫৭) কাছ থেকে ১০টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ মে মো. জাহিদুল আলম কাদির নামের এক ব্যক্তিকে  রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে কাদিরের স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে ৩ জুন গাবতলী এলাকা অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তী সময়ে ময়মনসিংহে জাহিদের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ গুলি ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। কাদির চিকিৎসক। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমাও আছে। কিন্তু তিনি নিজের পেশায় না থেকে চুক্তিতে খুন-খারাবি করতেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে মেসার্স নেত্রকোনা আর্মস কোং এর স্বত্বাধিকারী এই মো. বাবুল মিয়ার কথা। তাঁর কাছ থেকেই অস্ত্র নিতেন কাদির ও তাঁর স্ত্রী।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রথমে গত ১১ মে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে একটি পিস্তল, একটি রিভলবার এবং ১২৫ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয় বাবুল মিয়াকে। এরপরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চরখাই থেকে বাকি আটটি অস্ত্রসহ ১০৬০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানিয়েছে তাঁর আগ্নেয়াস্ত্রের বৈধ ডিলারশিপ থাকলেও বেশি মুনাফার জন্য অবৈধ পন্থায় অস্ত্র কেনাবেচা করে আসছিলেন। ময়মনসিংহ ছাড়াও রাজশাহীর চট্টগ্রাম ও খুলনার কয়েকজন বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ডিলারের সঙ্গে তাঁর অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচার তথ্য পাওয়া গেছে। সুন্দরবনের জলদস্যুরা মূলত তাঁর কাছ থেকে অস্ত্র নিত। এই উদ্ধারকৃত অস্ত্র জলদস্যুদের হাতে পৌঁছানোর কথা ছিল।