লংগদুতে জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কর্মীকে গুলি করে হত্যা

পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার রক্তাক্ত হলো। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার লংগদু ইউনিয়নের দোজরপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হলেন আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) এক কর্মী। আজ শুক্রবার সকালে রঞ্জন চাকমাকে (৪২) হত্যা করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোজরপাড়া এলাকায় আজ শুক্রবার ছিল সাপ্তাহিক হাট। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে রঞ্জন চাকমাসহ কয়েকজন একটি চায়ের দোকানে গল্প করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে ৮ থেকে ১০ জন দুর্বৃত্ত এসে রঞ্জনকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বকুল চাকমা নামের আরেক ব্যক্তি আহত হন। এ ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করেছে। তবে ইউপিডিএফ তা অস্বীকার করেছে।

জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, রঞ্জন চাকমা একসময় আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি আপাতত নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। রঞ্জনকে ইউপিডিএফের অস্ত্রধারীরা দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করেছে।

ইউপিডিএফের মুখপাত্র মাইকেল চাকমা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ইউপিডিএফ জড়িত নয়। তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। জনসংহতি সমিতি ইউপিডিএফকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দায়ী করছে।
লংগদু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জন কুমার সামন্ত প্রথম আলোকে বলেন, দোজরপাড়া এলাকায় একজনকে গুলি করে হত্যার সংবাদ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

গত ৩ মে নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদে নিজ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন নানিয়ারচরের উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা। তিনি জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। পরদিন শুক্রবার শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৫ জন নিহত হন। নিহত লোকজনের মধ্যে ছিলেন ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা। অন্য চারজন হলেন সুজন চাকমা, প্রণব চাকমা, সেতু চাকমা ও তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক মো. সজীব। এরপর খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলায় ইউপিডিএফের এক কর্মী এবং পরে ২৮ মে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে করল্যাছড়ি গ্রামে ইউপিডিএফের তিন কর্মী খুন হন।

শক্তিমান হত্যা ও পরদিন পাঁচ হত্যার সঙ্গে ইউপিডিএফ জড়িত বলে অভিযোগ করে জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক। তবে ইউপিডিএফ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।