আমরা মনে করি, ইউনাইটেডে গেলে উত্তম চিকিৎসা হবে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়া সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নেবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলা হচ্ছে পিজিতে পাঠানো হবে, সেখানে ভালো ভালো ডাক্তার আছে। আবার বলছেন সিএমএইচে পাঠানো হবে। সরকারের মনোভাব খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দেওয়া। কালবিলম্ব না করে যে হাসপাতালে তিনি ভর্তি হতে চাইছেন, সেখানে তাঁকে ভর্তি করা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের কথা কেন বলছি, তাঁর যে রোগগুলো, তা শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় নয়, তাঁর সুচিকিৎসার প্রয়োজন আছে। খালেদা জিয়া যেসব অসুস্থতায় আক্রান্ত, এর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ দরকার। পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে অবনতি ঘটেছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল যতটুকু খবর পেয়েছি, উনি এখন সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারছেন না। ব্যক্তিগত কাজকর্ম করার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছে। যে চোখে অপারেশন হয়েছে, তা আরও লাল হচ্ছে। ঘাড়ের ব্যথা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে বাঁ হাতের আঙুলগুলো সার্বক্ষণিক ব্যথা করছে। এ কারণে হাত দিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না। কোমরের ব্যথা বাঁ পায়ের তলা পর্যন্ত ছড়িয়েছে। এটা খুবই মারাত্মক।’

ফখরুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওনার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা। এটাকে নরমাল এক্স-রে মেশিনে, নরমাল সিটি স্ক্যানে ও নরমাল এমআরআইতে হবে না। এ জন্য স্পেশাল এমআরআই, স্পেশাল সিটি স্ক্যান ও স্পেশাল হসপিটালাইজেশন প্রয়োজন হবে। এই জিনিসগুলো দিতে সরকার কোনোভাবেই রাজি হচ্ছে না। একমুহূর্ত বিলম্ব না করে আজকেই তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া দরকার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে বলছেন, আমরা ইউনাইটেড হাসপাতালের কথা বলছি কেন। বলছি এ জন্য, আমাদের আস্থাটা ওখানে। রোগীর যে ডাক্তারের কাছে আস্থা থাকে, সেই ডাক্তারের কাছে যায়। আমরা মনে করি, ইউনাইটেডে গেলে উত্তম চিকিৎসা হবে।’

ফখরুলের বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যেভাবে নিঃসঙ্গ রাখা হয়েছে, এটা মানবাধিকারের বিপক্ষে, জেল কোডের বিপক্ষে। একজন বন্দীকে নির্জনভাবে রাখতে পারেন না। এটা বেআইনি। জেল কোডে কোথাও বলা নেই যে আমি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারব না।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনাকে যদি স্কয়ারে নিতে পারেন, প্যারোলে বিদেশে পাঠাতে পারেন, নাসিম সাহেবকে যদি ল্যাবএইডে নিতে পারেন, জলিল সাহেবকে ল্যাবএইডে দিতে পারেন, তাহলে দেশনেত্রীকে ইউনাইটেডে দেবেন না কেন? কারণ কী? কারণ একটাই—আপনারা তাঁর ক্ষতি করতে চান। তাঁর জীবন বিপন্ন করতে চান। সেই কারণে আপনারা এই পথ বেঁচে নিয়েছেন।’

ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের কাস্টডিতে আছেন। বিনা চিকিৎসায় তাঁর কিছু হলে দায় সরকারকে নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।