বান্দরবানের লামায় মারমা তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

বান্দরবানের লামা উপজেলার ইয়াংছা এলাকায় আজ রোববার সকালে এক মারমা তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইয়াংছার অংহ্লারি উক্যসিংপাড়ায় নিজের শোয়ার কক্ষ থেকে মেহ্লাউ মারমা (১৯) নামের তরুণীর লাশ উদ্ধার হয়।

পুলিশ বলেছে, মেয়েটির লাশে কোনো দাগ নেই। তবে জিহ্বা বের হয়ে ছিল। ময়নাতদন্তের আগে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে না বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তবে স্থানীয় লোকজন দাবি করেছেন, মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আর সে জন্য মেয়েটির ঘরের সোনার চেইনসহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি গেছে।

অংহ্লারি উক্যসিংপাড়ার লোকজন বলেছেন, মেহ্লাউ মারমাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে। এ জন্য তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের দাগ নেই। পাড়ার কার্বারী (পাড়াপ্রধান) উক্যসিং মারমা বলেছেন, মেয়েটি আত্মহত্যা করলে অথবা আকস্মিক রোগে মারা গেলে মূল্যবান জিনিসপত্র থাকার কথা। হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর গলার চেইন, দুটি আংটি, কানের দুল ও দামি মুঠোফোন, কিছু নগদ টাকা—কোনো কিছু নেই। হত্যাকারীরা ওই সব নিয়ে গেছে। 

লামা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে লামা-চকরিয়া সড়কের ইয়াংছা এলাকার অংহ্লারি উক্যসিংপাড়া। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ৩০টি মারমা পরিবারের পাড়াটির প্রত্যেকটি বাড়ির দূরত্ব খুব কাছাকাছি। ক্রাহ্লাঅং মারমা বাড়িতে তাঁর মেয়ে মেহ্লাউ মারমার কক্ষের পাশে গ্রিল ছাড়া একটি খোলা জানালা রয়েছে। জানালা দিয়ে অনায়াসে লোকজন ভেতরে ঢোকা ও বের হওয়া সম্ভব। ওই কক্ষের পাশে ড্রয়িংরুমের পরে আরেকটি কক্ষে মেহ্লাউর বাবা ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েটির বাবা ক্রাহ্লা অং ও পাড়াবাসী কেউ গভীর রাতে কোনো সাড়া-শব্দ পাননি বলে জানিয়েছেন।
ক্রাহ্লা অং মারমা বলেছেন, খাওয়াদাওয়ার পর রাতে মেয়ে নিজের কক্ষে ঘুমোতে যায়। সকালে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় কক্ষে গিয়ে তিনি দেখেন সে শোয়া অবস্থায় মৃত। তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে মেহ্লাউ সবার ছোট। ১১ বছরের ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী রাঙামাটিতে বড় মেয়ের বাড়িতে গেছেন। মেয়েটি এবারে লামা ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) দিয়েছে।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আপ্পেলা রাজু নাহা প্রথম আলোকে বলেন, এটি হত্যা নাকি অন্য ধরনের মৃত্যু—ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া না গেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। মেয়েটির লাশে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে জিব বের হয়েছে।

ওসি রাজু নাহা বলেন, মেয়েটির গলার চেইন, কানের দুল ও মুঠোফোন পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিবারের সদস্যরা ও পাড়াবাসী জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।