মার্শাল আর্ট-কন্যা সান্ত্বনা এখন সাফল্যের রূপকার

লালমনিরহাটের মার্শাল আর্ট–কন্যা সান্ত্বনা (সর্ব ডানে) ও তাঁর সাত শিক্ষার্থী। ১১ জুন লালমনিরহাট সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে।  প্রথম আলো
লালমনিরহাটের মার্শাল আর্ট–কন্যা সান্ত্বনা (সর্ব ডানে) ও তাঁর সাত শিক্ষার্থী। ১১ জুন লালমনিরহাট সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে। প্রথম আলো
>
  • ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সান্ত্বনা প্রান্তিক কৃষক সুভাষের মেয়ে।
  • বারিধারায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক সান্ত্বনা।
  • সান্ত্বনা লালমনিরহাট সরকারি কলেজের ছাত্রীদের তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ দেন
  • ইতিমধ্যে দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছেন সান্ত্বনা
  • সান্ত্বনা সাত নম্বর স্বর্ণপদকটি জিতেছেন শুক্রবার

মার্শাল আর্ট-কন্যা সান্ত্বনা রানী রায় পেলেন আরেকটি স্বর্ণপদক। এর আগে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার এই তরুণী ছয়টি স্বর্ণপদক পেয়েছেন। অতুলনীয় ক্রীড়া নৈপুণ্য এবং নানা ক্ষেত্রে দক্ষতার ছাপ রাখায় ইতিমধ্যে তিনি দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় তাঁর এক শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক এবং দুজন রৌপ্য ও ছয় শিক্ষার্থী ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।

সান্ত্বনা রানী সাত নম্বর স্বর্ণপদকটি জিতেছেন গত শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওয়ালটন দশম জাতীয় তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপ-২০১৮-এ জ্যেষ্ঠ মেয়েদের ৭০ কেজি শ্রেণিতে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা সান্ত্বনা রানী আদিতমারীর সারপুকুর ইউনিয়নের হরিদাশ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সুভাষ রায়ের মেয়ে। তিনি ঢাকার বারিধারায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি লালমনিরহাট সরকারি কলেজের ছাত্রীদের তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ দেন।

সান্ত্বনা রানী রায় বলেন, দীর্ঘদিন অধ্যবসায় ও অনুশীলনের পর সাফল্যের মুখ দেখেছেন তিনি। তিনি ২০০৫ সাল থেকে মার্শাল আর্টের ওপর (কারাতেদো, তায়কোয়ান্দো) পর্যায়ক্রমে রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকায় প্রশিক্ষণ নেন। ২০১১ সালে ব্ল্যাক বেল্ট পান তিনি। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইটিএফ তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যপদক, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় দ্বিতীয় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক লাভ করেন। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সপ্তম এশিয়ান তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পান তিনি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় সপ্তম জাতীয় আইটিএফ তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পান। এই প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ায় তাকে আরও একটি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় অগ্রণী ব্যাংক নবম জাতীয় তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতা এবং চলতি বছরের এক জানুয়ারি অগ্রণী ব্যাংক চতুর্থ বাংলাদেশ কাপ তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতায় সান্ত্বনা রানী দুটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তিনি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইংয়ে অনুষ্ঠিত ২০ তম ওয়ার্ল্ড তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক পান।

সান্ত্বনার শিক্ষার্থীদের সাফল্য
সান্ত্বনা যে নিজেই একের পর এক স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছেন তা কিন্তু নয়, তাঁর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কয়েকজন তরুণ-তরুণী জিতে নিয়েছেন স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক। ৮ ও ৯ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওয়ালটন দশম জাতীয় তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপ-২০১৮ প্রতিযোগিতায় তাঁর তিন ছাত্রী ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে। তারা হলো লালমনিরহাট সরকারি কলেজের ছাত্রী জান্নাতি খাতুন, হাসি বেগম, সাথী রানী। এ ছাড়া তার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার শিক্ষার্থী জিসান রেজা স্বর্ণপদক, গোলাম রাব্বী ও ইসরাত চৌধুরি ইকরা রৌপ্য এবং আব্বাস রাজা, আদনাত আফরোজ ও রাফিদ মল্লিক ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে।