দীঘিনালায় শাকসবজির বাজার চড়া

চাহিদার তুলনায় সবজির জোগান কম থাকায় দাম বেড়েছে অনেকটাই। ছবি: প্রথম আলো
চাহিদার তুলনায় সবজির জোগান কম থাকায় দাম বেড়েছে অনেকটাই। ছবি: প্রথম আলো

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পর দীঘিনালায় শাকসবজি বাজার এখন চড়া। চাহিদার তুলনায় সবজির জোগান কম থাকায় পণ্য কেনা নিয়ে এক ধরণের প্রতিযোগিতা চলছে বাজারে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে বন্যায় দীঘিনালার ১৫ একর সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে মেরুং ইউনিয়নে উপজেলার চার ভাগের তিন ভাগ সবজি উৎপাদন হয়। ১১ থেকে জুন পর্যন্ত এই ইউনিয়নের ফসলি জমি ছিল পানির নিচে।

উপজেলায় আটটি বাজার রয়েছে। এর মধ্যে সাতটিতে সাপ্তাহিক হাট বসে। বন্যার কারণে এর মধ্যে কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বোয়ালখালী নতুন পাইকারি বাজারের প্রতিদিন কেনাবেচা চলে।

স্থানীয় হাটবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যার আগে করলার দাম ছিল প্রতি কেজি ৩০ টাকা। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ২০ টাকা কেজি ছিল বরবটি ও ঢ্যাঁড়স। এখন এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭০ ও ৮০ টাকা কেজিতে। টমেটো ১০০ টাকায়, পটল ৬০ টাকায়, কাঁকরোল ৭০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৯০ টাকায়, বেগুন ৬০ টাকায় ও আলু ২৫ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বোয়ালখালী নতুন বাজারের পাইকারি বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কোরবান আলী (৫০), মো. দুলাল মিয়া (৪৬), মো. রাসেল মিয়া (২৮), রাজীব চন্দ্র নাথ (৩০) ও অমল বড়ুয়া (৪০)র ভাষ্য, বন্যার আগে বাজারে প্রচুর সবজি ছিল। তাই দামও কম ছিল। কিন্তু বন্যার পর বাজারে ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় চার ভাগের একভাগ সবজিও আসছে না। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সবজি বিক্রেতারা পাহাড়ের ওপর চাষ করা সবজি সংগ্রহ করে আনছেন। তাই সব মিলিয়ে দাম একটু বেশি।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে এই বাজারে ঝুঁড়িতে (লাই) করে এক ব্যবসায়ী ঢেঁড়শ নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি ও কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। দাম বেশি দিয়ে যে যেভাবে পারছে কিনে নিচ্ছে। বাজারে আসা ক্রেতা মিন্টু সাহা, ঊমি বড়ুয়া, মো. শাহ আলম ও সুভাষ চাকমা বলেন, সবজির দাম দ্বিগুন বেড়ে গেছে। ক্রেতারা রীতিমত প্রতিযোগিতা দিয়ে সবজি কিনেছেন। ক্রেতারা বাজারে এসে বসে থাকেন কখন সবজি বিক্রির জন্য আসবে এ আশায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুপন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্যায় ৯৫ জন সবজি চাষির ১৫ একর সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বাজারে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, একজন চাষি সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ শতক পর্যন্ত সবজি করে থাকেন।’