মিয়ানমারের কাছে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণ চায় আইসিসি

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণ জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসির প্রাক-বিচারিক শুনানিতে তিন সদস্যের আদালত মিয়ানমারকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে পর্যবেক্ষণ দিতে বলেছে।

নেদারল্যান্ডসের একটি কূটনৈতিক সূত্র আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এদিন পিটার কোভাকসের নেতৃত্বাধীন আদালত রোহিঙ্গাদের জোর করে বের করে দেওয়ার বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে জোর করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আইসিসির তদন্তের এখতিয়ার আছে কী না এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ওই আদালতে গতকাল বুধবার এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের একদিন পর মিয়ানমারের কাছে আদালত পর্যবেক্ষণ চাইল।

নেদারল্যান্ডসের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের কাছে একই বিষয়ে গত ১১ জুন পর্যবেক্ষণ চাওয়ার পর এবার মিয়ানমারের মত চাইল আইসিসি। রোহিঙ্গাদের জোর করে বের করার দেওয়ার ব্যাপারে আইসিসির তদন্তের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আদালত সব পক্ষের মত নেবে।

আইসিসির ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, মিয়ানমার ২৭ জুলাই পর্যবেক্ষণ জমা দেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এ নিয়ে কোনো মত থাকলে তা উপস্থাপনের জন্য প্রধান কৌঁসুলি ফাতাও বেনসুদাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রাক-বিচারিক শুনানিতে তিন সদস্যের আদালত বলেছে, ফাতাও বেনসুদার ৯ এপ্রিলের আবেদনের প্রসঙ্গ টেনেছেন। ফাতাও বেনসুদা অভিযোগ করেছেন, ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারে আইনসম্মতভাবে উপস্থিত ছয় লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাড়িয়ে দেওয়ার ওই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে মিয়ানমারে। তাই আদালত মনে করে, প্রধান কৌঁসুলির অনুরোধের বিষয়ে মিয়ানমারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যবেক্ষণ চাওয়াটা যথাযথ হবে। ওই পর্যবেক্ষণ বিশেষ এই পরিস্থিতিতে আদালততে প্রধান কৌঁসুলির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।

প্রসঙ্গত রোম সনদের প্রসঙ্গ টেনে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের বিষয়ে আইসিসির তদন্তের এখতিয়ার নিয়ে আবেদন জানান ফাতাও বেনসুদা। ১১ এপ্রিল প্রাক শুনানি আদালতের সভাপতি তিন সদস্যের আদালতকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেন। ফাতাও বেনসুদা তদন্তের আবেদন জানালেও এ নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। কারণ বাংলাদেশ রোম সনদে সই করলেও মিয়ানমার এখনো তা করেনি। ফলে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি তদন্তের এখতিয়ার আইসিসির আছে কী না সে প্রশ্ন রয়েছে।

৭ মে প্রাক বিচারিক শুনানিতে আদালত বলেছেন, মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ রয়েছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। তাই কৌঁসুলির অনুরোধের বিষয়ে বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ চাওয়াটা যথার্থ হবে। আর ওই পর্যবেক্ষণ কৌঁসুলির অনুরোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আদালতের জন্য সহায়ক হবে। পরে আইসিসির অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ ১১ জুন পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।