তিনটি দুর্ঘটনায়ই ট্রাক জড়িত, নিহত ১০

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় থেমে থাকা বিআরটিসির বাসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ট্রাক। এতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ও বাসে থাকা ছয়জন নিহত হন। ছবি: প্রথম আলো
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় থেমে থাকা বিআরটিসির বাসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ট্রাক। এতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ও বাসে থাকা ছয়জন নিহত হন। ছবি: প্রথম আলো

তিন জেলায় দুই দিনে পৃথক তিনটি দুর্ঘটনায় ১০ জন মারা গেছেন। রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় বিকল বিআরটিসি বাসের পেছনে ট্রাকের ধাক্কায় ছয়জন নিহত হন। নাটোর শহরে বালুবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার দুই আরোহী এবং সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন।

রংপুরের দুর্ঘটনা ঘটে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে। অন্য দুটি দুর্ঘটনা ঘটে আজ শনিবার ভোর ও সকালে।

প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রংপুর: পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের একটি চাকা ঠাকুরটারী এলাকায় রাত দেড়টার দিকে ফেটে যায়। চাকাটি বদল করছিলেন বিআরটিসির চালক ও তাঁর সহকারী। মহাসড়কে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন কয়েকজন যাত্রী। রাত দুইটার দিকে রংপুরগামী একটি ট্রাক পেছন থেকে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীসহ বিআরটিসির বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হন। আহত হন ১৩ জন। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে তারাগঞ্জ ও রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন দিনাজপুর সদর উপজেলার নিমতলী গ্রামের নিশাদ আলী (২০) ও সাজ্জাদ হোসেন (১৯)। লাশ ও গাড়ি দুটি তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মী বলেন, নিহত ব্যক্তিদের শরীরের অবস্থা এতটাই ছিন্নভিন্ন যে তাঁদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সবাই বাসটির যাত্রী ছিলেন।


নাটোর: সদর থানার উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে জানান, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নাটোর স্টেশন এলাকা থেকে একটি অটোরিকশা চার যাত্রী নিয়ে হরিশপুর এলাকার মিশন হাসপাতালে যাচ্ছিল। আলাইপুর মসজিদ এলাকায় বালুবোঝাই একটি ট্রাক পেছন থেকে ওই অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশার যাত্রী জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল এলাকার সুদিস্মা দেবনাথ (৪৫) ও তাঁর প্রতিবেশী কানাই চন্দ্রের (৩৫) মৃত্যু হয়। আহত হন সুদিস্মা দেবনাথের স্বামী মঙ্গল দেবনাথ (৫০) ও মেয়ে আঁখি দেবনাথ (১৬)। আহত ব্যক্তিদের প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে, পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রুবেল হোসেন জানান, পুলিশ ট্রাকটি আটক করলেও এর চালক ও সহকারী পালিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ: ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে ঢাকা থেকে বগুড়াগামী যাত্রীবাহী একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত ১১ জন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রায়গঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার পুলিশ উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের ভুঁইয়াগাঁতী এলাকার জসিম উদ্দিন ফকিরের ছেলে শফি উদ্দিন ফকির (৪৫) ও একই ইউনিয়নের শ্যামনাই গ্রামের দুহা শেখের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫)। নিহত দুজনই ট্রাকের যাত্রী ছিলেন।

রায়গঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মোজাম্মেল হকের ভাষ্য, ঘটনাস্থল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত ১১ জনকে রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।