ভারতীয় নাগরিক রোখসানার স্বামীকে ঢাকায় আটক করেছে পুলিশ

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রোখসানা আকতার। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রোখসানা আকতার। ছবি: প্রথম আলো

ভারতীয় নাগরিক রোখসানা আকতারের স্বামী আবদুল হককে আটক করেছে সরকারি রেলওয়ে থানার (জিআরপি) পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল হককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ।

জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার আজ শনিবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আবদুল গতকাল রাত থেকে থানায় আটক আছেন। আজ তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

ওসি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্তস্বত্বা স্ত্রীকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ফেলে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন আবদুল।

গত সোমবার রোখসানার স্বামী আবদুল হক রাজধানী ঢাকার আজিমপুরের বাসা থেকে স্ত্রী ও বোনকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে একজন চিকিৎসকের কাছে যান। এরপর রোখসানাকে কমলাপুর রেলস্টেশনে রেখে বোনকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। পরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের শৌচাগারে সন্তান জন্ম  দেন রোখসানা। এখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে রোখসানা জানান, দেড় বছর আগে ভারতে তাঁদের বিয়ে হয়েছে। ভারতের বেঙ্গালুরুতে আবদুল আসবাবপত্রের দোকানে কাজ করতেন। বিয়ের আগে আবদুল রোখসানার বাড়িতে আসবাবপত্র মেরামতের কাজ করতে যান। সেখান থেকেই তাঁদের পরিচয়। তিন মাস প্রেম করার পর পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। বাংলাদেশে আসার পর রোখসানার ভারতীয় পাসপোর্ট আবদুলের কাছেই ছিল। রোখসানার কাছে আবদুলের কোনো ছবি নেই, এমনকি কোনো ফোন নম্বরও নেই।

রোখসানা জানান, তাঁর ননদের নাম নিলু। ননদের স্বামীর নাম সোলেমান। আজিমপুর কবরস্থানের কাছেই ননদের বাসা। ঘটনার দিন ননদের বাসা থেকেই ননদ এবং স্বামী আবদুলের সঙ্গে তিনি বের হন।

রোখসানার দেওয়া তথ্য অনুসারে আজিমপুর কবরস্থান থেকে ননদের স্বামী সোলেমানের খোঁজ পাওয়া যায়। সোলেমান জানান, তাঁর স্ত্রী (রোখসানার ননদ) বাসায়। তবে রোখসানার স্বামী আবদুল কোথায় তা তিনি জানেন না।

সোলেমান জানান, পাঁচ-ছয় বছর আগে আবদুল চট্টগ্রামে এক বিয়ে করেন। সেই ঘরে তাঁর কোনো সন্তান নেই। তারপর আবদুল ভারতের বেঙ্গালুরু যান এবং সেখানে বিয়ে করেন। ১০ থেকে ১২ দিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রী রোখসানাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

রোখসানার সন্তান বর্তমানে ভর্তি আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে (স্ক্যাবু)। হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে জানান, মাত্র ১ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজন নিয়ে নবজাতকের জন্ম হয়েছে। জন্ডিসসহ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রথম দিকে নল দিয়ে খাবার দিলেও এখন খাবার বন্ধ আছে। এই মুহূর্তে এ নবজাতককে আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।