শেরপুরে জেএমবির ছয় সদস্যের কারাদণ্ড

রায় শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুস শাহাদাতসহ অন্য আসামিদের পুলিশি পাহারায় কারাগারে নেওয়া হয়। শেরপুর, ২৫ জুন। ছবি: সংগৃহীত
রায় শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত নাজমুস শাহাদাতসহ অন্য আসামিদের পুলিশি পাহারায় কারাগারে নেওয়া হয়। শেরপুর, ২৫ জুন। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির ছয় সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শেরপুরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ) এম এ নূর আজ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শেরপুর শহরের ঢাকলহাটী এলাকার নাজমুস শাহাদাত (২৮), শেরীপাড়া এলাকার মনিরুজ্জামান মানিক (২৮), নওহাটা এলাকার মারুফ হোসেন (৩১), নারায়ণপুর এলাকার তানভীর (৩২), মো. সোয়েব (৩৩) ও সিরাজগঞ্জের আমির হামজা (৩২)। এঁদের মধ্যে নাজমুস শাহাদাতকে সাড়ে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকিদের দেওয়া হয়েছে সাড়ে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা। অনাদায়ে তাঁদের আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি অরুণ কুমার সিংহ রায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

রায় ঘোষণার সময় আমির হামজা ছাড়া অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে বৈঠক করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা শেরপুর শহরের ঢাকলহাটী এলাকায় নাজমুস শাহাদাতের বাসায় অভিযান চালান। এ সময় নাজমুস ও তাঁর সহযোগী মনিরুজ্জামানকে আটক করা হয়। নাজমুস নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য বলে পুলিশের দাবি। ওই সময় তাঁর বাসা থেকে ১৭টি জিহাদি দাওয়াতপত্র ও বেশ কিছু সিডি-ক্যাসেটসহ নিষিদ্ধ সংগঠনের আলামত উদ্ধার হয়েছিল বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

এ ঘটনায় শেরপুর সদর থানার তৎকালীন উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মো. সজীব খান বাদী হয়ে নাজমুস শাহাদাত, মনিরুজ্জামানসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশে সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ২০১০ সালের ১৪ মার্চ এই সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচার চলাকালে অভিযুক্ত আরেক আসামি আবুল কালাম আজাদ মারা যান।

ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি অরুণ কুমার সিংহ রাষ্ট্রপক্ষে এবং এম কে মোরাদুজ্জামান আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন।

পিপি অরুণ কুমার সিংহ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরাদুজ্জামান রায়ের পর বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।