গাজীপুরে তিন কেন্দ্রে বিএনপির পোলিং এজেন্টের দেখা মেলেনি

গাজীপুরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের গাছা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
গাজীপুরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের গাছা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কমলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও গাছা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রতিটির চারটি কক্ষ ঘুরে ধানের শীষ প্রতীকের কোনো এজেন্টের দেখা পাওয়া যায়নি।

গাজীপুরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল নয়টার দিকে ভোট দেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর এলাকার ওই কেন্দ্রে ধানের শীষের কোনো এজেন্টকে পাওয়া যায়নি।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কানজিরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল কিংবা আজ সকালে ধানের শীষের পক্ষ থেকে কেউ আমার কাছে রিপোর্ট করেননি।’

এর আগে গাজীপুরের কলেজ রোড টঙ্গী এলাকায় বছিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। কেন্দ্রের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সাদাপোশাকে নেতা-কর্মীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে।’ শেষ পর্যন্ত ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তিনি।

কানাইয়া কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট না থাকা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা যদি এজেন্ট না দিতে পারে, তাহলে আমি কী করব? আমি তো আর কাউকে বের করে দিইনি। কাউকে কিছু বলিওনি। তারাই কেউ কেন্দ্রে আসেনি।’

গাজীপুরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কমলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের চারটি বুথ ঘুরে ধানের শীষের কোনো পোলিং এজেন্টকে দেখা যায়নি। একটি বুথে রাজু কামাল নামে নৌকা মার্কার এক এজেন্ট বলেন, ‘তারা পোলিং এজেন্ট না দিলে আমরা কী করব?’ আরেক বুথে শাকিল আমিন নামের এক এজেন্ট বলেন, ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট কেউ আসেননি কেন, তারাই ভালো বলতে পারবে।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ বলেন, সকালে একজন ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিচয়পত্রে ছবি ছিল না। ছবিযুক্ত পরিচয়পত্রসহ আসতে বলা হলে আর কেউ আসেননি।

কেন্দ্র থেকে কোনো চাপ আছে কি না—জানতে চাইলে কাউসার জানান, কোনো রকম চাপ নেই।

কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের দফায় দফায় স্লোগানসহ মিছিল করতে দেখা যায়।

গাজীপুরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের গাছা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের চারটি কক্ষ ঘুরে দেখা গেছে, এর তিনটিতে ধানের শীষের পক্ষে কোনো এজেন্ট নেই। তবে একটি কক্ষে নেকমত নামের একজন নিজেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁর পরিচয়পত্রে নিজের কোনো ছবি নেই। তিনি বিএনপির পোলিং এজেন্ট কি না, তা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম দাবি করেন, সব প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সেখানে আছেন। ভোটও সুষ্ঠু হচ্ছে।

কামরুল ইসলাম বলেন, তাঁর কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৭২। সেখানে আটটি বুথ আছে। প্রথম ঘণ্টায় প্রতি বুথে ৭০টি করে ভোট পড়েছে।

কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে নারী ভোটাররা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন।

গাছা এলাকার বাসিন্দা ইতি রানী বলেন, ভোটের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তারপরও ভোট দিতে পেরে তাঁর আনন্দ লাগছে।

ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নূর আলম বলেন, ‘ভিড় এড়ানোর জন্য সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছি। এখন পর্যন্ত কোনো অসংগতি চোখে পড়েনি।’