নারায়ণগঞ্জে শিশু রিফাত হত্যায় ভগ্নিপতিসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড

রায় শেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মহিউদ্দিন হাসনাত। নারায়ণগঞ্জ, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
রায় শেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মহিউদ্দিন হাসনাত। নারায়ণগঞ্জ, ২ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ১২ বছরের শিশু আশিকুর রহমান রিফাত হত্যা মামলায় তার ভগ্নিপতিসহ দুজনকে মৃত্যু দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রবিউল আউয়াল এ রায় দেন।

রায় ঘোষণাকালে নিহতের ভগ্নিপতি মূল আসামি মহিউদ্দিন হাসনাত উপস্থিত থাকলেও অপর আসামি সাইফুল ইসলাম পলাতক ছিলেন। সাইফুল ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন বলে জানা যায়।

নিহত রিফাত রাজধানীর মিরপুর বায়তুল মামুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ২০১২ সালে হত্যাকাণ্ডের ওই ঘটনা ঘটে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কে এম ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১২ সালের ১০ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রিফাতকে ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে থেকে অপহরণ করেন মহিউদ্দিন ও সাইফুল। ওই দিনই তারা রিফাতকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নাভানা সিটি ভূঁইয়া এলাকায় এনে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। লাশ উদ্ধারের পর কোনো পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিয়ে পুলিশ লাশটি দাফন করে। পরে গণমাধ্যমের খবর দেখে রিফাতের পরিবার লাশ শনাক্ত করে। পরিবারের পক্ষ থেকে মহিউদ্দিনকে সন্দেহ করা হয়—এই সূত্র ধরে পুলিশ মহিউদ্দিন ও সাইফুলকে আটক করে। পরে ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট মহিউদ্দিন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনোয়ারা বেগমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

কে এম ফজলুর রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী আসামি মহিউদ্দিন আদালতকে বলেছিলেন, পারিবারিক ঝগড়ার সময় শাশুড়ি তাঁকে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতেই তিনি শিশু শ্যালককে হত্যা করেছেন। এ জন্য তিনি ৩০ হাজার টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি সাইফুলকে ভাড়া করেন। আদালত এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জন এবং আসামিপক্ষের ৩ জনের সাক্ষ্য নেন। আসামি সাইফুল ইসলাম জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

নিহত রিফাতের বাবা তোফাজ্জল হোসেন আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল বারী ভূঁইয়া বলেন, ‘এই রায়ে আসামিপক্ষ ন্যায়বিচার পায়নি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’