মির্জাপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বড় বড় গর্ত

মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: সোহেল মোহসীন
মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: সোহেল মোহসীন

ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক বোঝাই করে পণ্য নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক ফারুক মিয়া (৫০)। মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সৃষ্টি হওয়া বিশাল গর্ত পার হওয়ার পর ফারুক মিয়া বললেন, ‘মনে অয় পরানডা ফিরা পাইলাম। খুব কষ্ট অইছে ওই গর্তটুকু পাড়ি দিতে।’

গত দুই দিনের টানা বর্ষণের কারণে মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই স্থান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলছে। গর্তের কারণে গতকাল বুধবার রাতে সার ও টিনবোঝাই দুটি ট্রাক উল্টে গেলে যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে।

এসব গর্ত কমিয়ে দিয়েছে যানবাহনের গতি। ছবি: প্রথম আলো
এসব গর্ত কমিয়ে দিয়েছে যানবাহনের গতি। ছবি: প্রথম আলো

আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ধেরুয়া রেলক্রসিং এলাকায় উড়ালসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণ পাশে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলছে। রাস্তাটির রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে তিনটি গর্ত। এর মধ্যে মাঝখানের গর্তটি অপেক্ষাকৃত বড়। প্রায় দেড় ফুট এই গর্ত পাঁচ ফুট লম্বা হয়েছে। অন্য দুটি গর্ত দিয়ে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারলেও মাঝখানের গর্তের কাছে গিয়ে থেমে যাচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে লম্বা সারি। এ ছাড়া ট্রেন চলাচলের সময় বেরিয়ার ফেলায় সারি আরও দীর্ঘ হচ্ছে। ফলে টাঙ্গাইলসহ উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনকে মহাসড়কের এই অংশে গড়ে ৮ থেকে ১০ মিনিট করে থেমে থাকতে হচ্ছে।

ধেরুয়া রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান সুরুজ মিয়া বলেন, এমনিতেই ট্রেন চলাচলের সময় এই স্থানে যানবাহন থেমে থাকে, এরপর রাস্তায় গর্ত। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। গত দুই দিনের বৃষ্টির কারণে গর্তের আকার বড় হয়ে গেছে।

গতকাল রাত আটটার দিকে টিনবোঝাই ও রাত ১২টার দিকে সারবোঝাই দুটি ট্রাক রাস্তার ওপর আটকে যায়। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। পুলিশ টিনবোঝাই ট্রাক রেকার দিয়ে সরিয়ে নিলে এক ঘণ্টা পর যান চলতে শুরু করে। আর সারবোঝাই ট্রাকটি থেকে সারের বস্তা নামিয়ে ট্রাকটিও ঘটনার এক ঘণ্টা পর রাস্তা থেকে সরিয়ে নিলে যান চলতে শুরু করে।

ধেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা মোক্তার হোসেন বলেন, রাতে দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। এতে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

জামালপুরের সরিষাবাড়িগামী বাসচালক মো. মানিক মিয়া (৪০) বলেন, রাস্তায় যে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে তাঁরা বাস নিয়ে কোনো রকমে চলতে পারলেও ভারী ট্রাক চলা খুবই কষ্টকর।

মুঠোফোনে চার লেন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (২) রেজাউল আলম বলেন, বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট গর্তটি মেরামত করা খুবই জরুরি। আবহাওয়া খারাপ থাকায় তা করা সম্ভব হয়নি। আজকের মধ্যেই রাস্তার ওই অংশটুকু যান চলাচলের সুবিধার্থে মেরামত করে দেওয়া হবে।