ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশকে 'মশাল' প্রতীক বরাদ্দে ইসির সিদ্ধান্ত বহাল রইল

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশকে ‘মশাল’ প্রতীক বরাদ্দে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদেশের পর ইনুর আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আদালত রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশকে ‘মশাল’ প্রতীক বরাদ্দে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই বহাল রইল।

২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার নেতৃত্বাধীন জাসদকে মশাল প্রতীক বরাদ্দ দেয় ইসি। আর এ নিয়ে একই বছরের ১০ আগস্ট রিভিউ নামঞ্জুর ইসি সিদ্ধান্ত দেয়। ইসির দেওয়া এই দুই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাসদের অপর অংশের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন। এর ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন।

রুলে জাসদের হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশকে ‘মশাল’ প্রতীক বরাদ্দের নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া ইসির সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি), ইসি সচিব ও হাসানুল হক ইনুকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আজ বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ছিল।

আদালতে ইনুর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

আইনজীবী সূত্র বলেছে, ২০১৬ সালের ১২ মার্চ জাসদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন পর্বে কমিটি গঠন নিয়ে দুই ভাগ হয় জাসদ। এক পক্ষ হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি ও শিরীন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে। অপর পক্ষ শরীফ নূরুল আম্বিয়াকে সভাপতি ও নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে। দুই পক্ষই দলীয় প্রতীক মশালের দাবি নিয়ে ইসিতে দ্বারস্থ হলে ওই বছরের ৬ এপ্রিল শুনানি হয়। একই বছরের ২৮ এপ্রিল হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার নেতৃত্বাধীন জাসদকে মশাল প্রতীক দেয় ইসি। তবে এ ক্ষেত্রে বিধি অনুসরণ না করে ওই প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দাবি করে শরীফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশ ২০১৬ সালের ১২ মে ইসিতে রিভিউ করে। এতে সাড়া না পেয়ে তারা হাইকোর্ট রিট আবেদন করলে ২২ জুন হাইকোর্ট ওই রিভিউ আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ইসিকে নির্দেশ দেন। ওই বছরের ১০ আগস্ট ইসি ওই রিভিউ নামঞ্জুর করে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এ অবস্থায় ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল ও ১০ মে ইসির দেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধান ওই রিটটি করেন।