সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মতিঝিল ও আজিমপুরে ৯৮৮টি ফ্ল্যাট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর মতিঝিল ও আজিমপুর সরকারি কলোনি এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ১০টি বহুতল ভবন উদ্বোধন করেছেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান আবাসনসুবিধা ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার অংশ হিসেবে আজ শনিবার সকালে পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব বহুতল ভবন উদ্বোধন করেন। মতিঝিলে চারটি ২০ তলা ভবনে ৫৩২টি এবং আজিমপুরে ছয়টি ২০ তলা ভবনে ৪৫৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মতিঝিল সরকারি কলোনিতে ভবন উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে আপনারা যেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি ভালো জায়গায় থাকতে পারেন।’

এ সময় তিনি সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধিসহ কর্মস্থলে তাঁদের পদবিগুলোকে যুগোপযোগীকরণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের সাফল্যের জন্য সরকারি কর্মচারীদের কর্তব্য সম্পাদনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করাতেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী ভবনের বাসিন্দাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার বিদ্যুৎ ও পানি উৎপাদনে অনেক টাকা ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এগুলোর ব্যবহারে সবাইকে যত্নবান হতে হবে। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নিজের হাতেই বিদ্যুতের সুইচটি বন্ধ করে যেতে হবে, পানির কলটিও নিজেকে বন্ধ করতে হবে, যাতে পানির অপচয় না হয়।

এসব কাজ নিজের হাতে করায় কোনো লজ্জা নেই উল্লেখ করে তিনি নিজেও ব্যক্তিজীবনে এসবের চর্চা করে থাকেন বলে জানান। তিনি ভবনের আশপাশে এবং ব্যালকনিতে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, কলোনির পুরোনো ভবনগুলো ভেঙে হাঁটার জায়গা, পার্ক, জলাধার, খেলার মাঠ ও বাগান তৈরি করা হবে।

দুটি অনুষ্ঠানেই সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আজিমপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং মতিঝিলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. দবিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার উভয় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী আজিমপুর কলোনির ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আজিমপুর কলোনিতে থাকার কথা স্মৃতিচারণা করে বলেন, ছোট ভাই শেখ কামালকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা নৌকায় করে গোপালগঞ্জ থেকে আজিমপুর কলোনিতে এসে এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন। জাতির পিতা তখন কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন।

নিজেকে আজিমপুর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এই এলাকা তাঁর শৈশব থেকেই অত্যন্ত পরিচিত। সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যা সমাধানে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই জাতির পিতা কলোনির ভবনগুলোর একটি করে তলা বাড়িয়ে দেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় আছে বলেই আজ উন্নয়নটা দৃশ্যমান হচ্ছে।’

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ অন্যান্য শহরে বহুতলবিশিষ্ট মোট ২৩টি আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন আয়তনের ৯ হাজার ৭০২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরও ১৯টি প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৮ হাজার ১৯০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ চলছে।