ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে 'গোলাগুলিতে' শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীসহ নিহত ২

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ‘গোলাগুলিতে’ দুজন নিহত হয়েছেন। র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ভাষ্য, নিহত দুজন ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের একজন রাজধানীর জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা নাদিম ওরফে পঁচিশ। তিনি ঢাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলে পরিচিত ছিলেন। পঁচিশ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় নিহত হন। আরেকজন হচ্ছেন মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় ইব্রাহিম ওরফে পাইলট বাবু (৩৫)। বেড়িবাঁধ এলাকায় ‘গোলাগুলিতে’ তিনি নিহত হয়েছেন।

র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো মুঠোফোন বার্তায় জানানো হয়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নাদিম (৩৫) নিহত হন। তিনি রাজধানীর শীর্ষ ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। র‍্যাব-২ সূত্র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে।

র‍্যাবের ভাষ্য, মো. নাদিম হোসেনের ছদ্মনাম পঁচিশ। বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের আড়ালে মাদক ব্যবসা করতেন তিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি তালিকাভুক্ত। প্রতিদিন তিনি মাদক ব্যবসা থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করতেন। তবে পুলিশ সহজে তাঁর নাগাল পেত না। নাদিম কখনো আত্মসমর্পণ করে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন। কিন্তু কারাগার থেকে বেরিয়ে আবার পুরোনো ব্যবসায় ফিরে যেতেন। পঁচিশের নামে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাসহ ১২টি মামলা রয়েছে।

জেনেভা ক্যাম্পের বেশ কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে পঁচিশের জন্ম। ছোটবেলায় নাদিমের মা-বাবা মারা যান। জেনেভা ক্যাম্প এলাকার একটি হোটেলে কাজ করতেন তিনি। বেতন ছিল ২৫ টাকা। ওই সময় থেকেই গাঁজা বিক্রি শুরু করেন। গাঁজা বিক্রি করতেন ২৫ টাকায়। এ কারণে ‘পঁচিশ’ নামে তাঁকে ডাকতে শুরু করে অনেকে। পরে এ নামই চালু হয়ে যায়।

জেনেভা ক্যাম্পের কয়েকজনের ভাষ্য, জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় ৪০ হাজারের মতো আটকে পড়া পাকিস্তানির বাস। এদের মধ্যে দুই শতাধিক ব্যক্তি এখন মাদক ব্যবসা করেন। এ দলের প্রধান নেতা ইশতিয়াক। ইশতিয়াকের সেকেন্ড ইন কমান্ড হলেন পঁচিশ আর ম্যানেজার মোল্লা আরশাদ।

আজ মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় ইব্রাহিম ওরফে পাইলট বাবু নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। র‍্যাবের ভাষ্য, গোলাগুলির ঘটনায় মারা গেছেন ইব্রাহিম। তিনি কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।

র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, গতকাল রাতে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় র‍্যাবের তল্লাশি চৌকি বসানো ছিল। এর সামনে দিয়ে দুজন মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। র‍্যাব তাদের থামার সংকেত দেয়। তাঁরা না থেমে গুলি চালানো শুরু করেন। র‍্যাব আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় একজন পালিয়ে যান। আরেকজনের গায়ে গুলি লাগে। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়। নিহত ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে।