দেশের অগ্রযাত্রায় রাশিয়াকে দরকার

‘বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী: বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনার। ঢাকা ক্লাব, ১০ জুন, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো
‘বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী: বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনার। ঢাকা ক্লাব, ১০ জুন, ঢাকা। ছবি: প্রথম আলো

রাশিয়া বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসের মূল ভিত্তি হলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। দেশের চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে অতীতের মতো রাশিয়ার সহযোগিতা বাংলাদেশের প্রয়োজন।

রাজধানীর শাহবাগের ঢাকা ক্লাবে আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এক সেমিনারে এ অভিমত দেন দুই দেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতি ‘বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী: বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ছবি: প্রথম আলো
সেমিনারে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ছবি: প্রথম আলো

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রাশিয়া সব সময় আমাদের খুব ভালো বন্ধু। নিরাপত্তা খাত, শক্তি খাত, বাণিজ্য খাতে এই দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও বড় হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষাসহ সব খাতেই দুই দেশের জনগণের বিনিময় করতে হবে। দুই দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাজ করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার মিনিস্টার কাউন্সেলর সের্গেই আর্কিডিভচ পাপভ বলেন, দুই দেশই নিয়মিত রাজনৈতিক যোগাযোগ রাখে। আমদানি ও রপ্তানির সম্পর্ক প্রায় সমান। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কিছুটা ধীর গতিতে এগোলেও ইতিবাচকভাবে এটি ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। শক্তি খাতসহ বাংলাদেশের উন্নয়নে রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে, যা ১৯৭০ সালের দিকেও ছিল।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিপদের দিনে যে পাশে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু। এই দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে গতিশীলতা এগিয়ে নিতে জনগণের মধ্যে সম্পর্কে জোর দিতে হবে। যুক্ত করতে দুই দেশের নতুন প্রজন্মকে।
মস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সাইফুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘রাশিয়া আগে আমাদের সাহায্য করত। এখন তারা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। এর জন্য বর্তমান সরকারের অবদান রয়েছে।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. শহীদুল্লাহ শিকদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়ার সম্পর্কের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে মূলভিত্তি। এই জনযুদ্ধের মাধ্যমেই দুই দেশের বন্ধুত্বের সূচনা হয়। বাংলাদেশের উন্নয়নের চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে অতীতের মতো রাশিয়ার সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন রাশিয়ান সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড কালচারের পরিচালক আলেকজান্ডার পি ডেমিন, বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মান্নান খান প্রমুখ।