'মন্ত্রী বলেন, এক নম্বর ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া কিছু করতে পারবেন না'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে পরিবারের সদস্য ও দলের নেতারা ১১ দিন ধরে চেষ্টা করেও দেখা করতে পারছেন না।

আজ বুধবার রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ ১১ দিন তাঁর পরিবারের সঙ্গে এবং কারও সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এটি নিয়ে তারা কোনো কথা না বলে কারাবিধির অজুহাত দেখাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে বারবার যোগাযোগ করা হলেও এ ব্যাপারে কোনো সুরাহা হচ্ছে না। অথচ কারাবিধি অনুযায়ী জেল সুপারই যথেষ্ট। কিন্তু জেল সুপারকে বললে তিনি বলেন, আইজি প্রিজনের কাছে যান। আইজি প্রিজনের কাছে গেলে তিনি বলেন, মন্ত্রীর কাছে যান। মন্ত্রীর কাছে গেলে বলেন, এক নম্বর ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া কিছু করতে পারবেন না।’

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যদি সরকারপ্রধানের কাছে অনুমতির জন্য যেতে হয়, তাহলে এটা কি আইনের শাসন? জেল কোড লঙ্ঘন করে খালেদা জিয়াকে তাঁর পরিবার, বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছে না সরকার। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।’

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মামলার ফাঁদ পাতা হয়েছে। এসব মামলার ফাঁদে ফেলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। এমন হাজার হাজার মামলা ঝুলন্ত আছে। খালেদা জিয়ার জন্য আইন লঙ্ঘন করে আলাদা আদালত গঠন করে দ্রুত সময়ে তাঁকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার মূল কারণ তাঁকে এবং বিএনপিকে বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতার দখল দীর্ঘায়িত করা। কারণ, খালেদা জিয়া আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন।

‘মিথ্যা’ মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া মূল মামলায় জামিন পেয়েছেন। কিন্তু অন্য মামলায় তাঁর জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে, যেন তাঁকে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা যায়।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারে শুভ চিন্তার উদয় হোক। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে তুমুল জনরোষ থেকে রেহাই পাবেন না। ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।