রোহিঙ্গারা আছে আলোচনায়, বাস্তবে নেই

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলছেন ‘ফ্রি বার্মা কোয়ালিশন’ নামের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মং জার্নি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলছেন ‘ফ্রি বার্মা কোয়ালিশন’ নামের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মং জার্নি। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নির্বিচার ও উদ্দেশ্যমূলক গণহত্যা চালাচ্ছে। এতে দেশটির গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকারের সমর্থন রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিছুই করছে না। স্বার্থের নিগড়ে বাঁধা বড় দুই প্রতিবেশী চীন ও ভারত এ ব্যাপারে চরম উদাসীন। বড় রাষ্ট্রশক্তিগুলোর কাছে মাথা নোয়ানো জাতিসংঘও আজ ‘দ্বিধান্বিত’—এসবই এখন রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর মানুষের নিয়তির অংশ হয়ে গেছে। এই নিরপরাধ জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের নিয়ে জোর আলোচনা আছে। তাদের প্রতি অনুকম্পা দেখানোর বড় বড় আয়োজনও আছে। কিন্তু কোথাও ‘রোহিঙ্গারা’ নেই। 

একুশ শতকের এ সময়ে চলা বীভৎস গণহত্যার শিকার দেশহীন মানুষ রোহিঙ্গাদের সমসাময়িক বাস্তবতা এভাবেই উঠে এল তাদের অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সরব দরদি দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কথায়। তাঁরা বাংলাদেশের প্রতিবেশী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে চলা ভয়াবহ নিপীড়নের চিত্র বিশ্বের নানা প্রান্তে তুলে ধরেন।

আজ বুধবার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে এ আলোচনা হয়। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, প্রতিবেশী দেশগুলোর আচরণ, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের উদ্যোগ এবং সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানও ছিল আলোচ্য বিষয়।

আলোচনার সূত্রপাত করেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। উপস্থিত শ্রোতাদের সবাই ছিলেন এ পত্রিকার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী।

আজকের আলোচনায় বড় অংশজুড়ে কথা বলেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মী, রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে কাজ করা মং জার্নি, যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সাবেক গবেষণা ফেলো জার্নি ‘ফ্রি বার্মা কোয়ালিশন’ নামের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। আলোচনা করেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার হিউম্যান রাইটস রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক জন প্যাকার এবং বাংলাদেশের সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম।

সু চি স্বৈরশাসকের হাতের পুতুল
আজকের মিয়ানমার কোন অবস্থায় আছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির অবস্থানই বা কি? জবাবে মং জার্নি বললেন, ‘গণতান্ত্রিক পথে কোনো উত্তরণই ঘটেনি মিয়ানমারের। দেশটিতে আসলে চলছে ‘অকৃত্রিম সামরিক একনায়কত্ব’ (ক্ল্যাসিক মিলিটারি ডিকটেটরশিপ)। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের সু চি কোনো সমাধান নন, বলতে গেলে তিনি একেবারে কিছুই নন। সামরিক বাহিনী সেখানে সবকিছুর নিয়ন্তা।’

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার হিউম্যান রাইটস রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক জন প্যাকার। ছবি: প্রথম আলো
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার হিউম্যান রাইটস রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক জন প্যাকার। ছবি: প্রথম আলো

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দেশটির ভেতরেও কোনো সংবেদনশীলতা নেই বলে জানান জার্নি। যদি কেউ তাদের পক্ষে কথা বলে, তবে সেসব মানুষের ভাগ্যে জোটে কারাভোগ। এ প্রসঙ্গে তিনি রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিউ সো ইউয়ের কথা উল্লেখ করেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এখনো নির্জন কারাবাস করছেন তাঁরা।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের অবস্থান কেমন? জার্নি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে বললেন, এ ইস্যুতে দেশটি বিভক্ত। সেখানে সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদের একটি অংশ এই অমানবিক বিষয়টির প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ দেওয়ার পক্ষে। আবার একটি অংশ এ নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো বৈরী সম্পর্ক চায় না। তাদের ভাবনার মধ্যে আছে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক।

ভূরাজনৈতিক অবস্থা
চীন আঞ্চলিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মিয়ানমারকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে। অর্থনীতি, সামরিক বিষয়ে তাদের বিপুল স্বার্থ জড়িত। তারা কখনোই চায় না এ স্বার্থের বিঘ্ন হোক। আজ মিয়ানমারের তার সব বল পায় চীনের কাছে থেকে। মিয়ানমারের সামরিক শাসকগোষ্ঠী বিশ্বাস করে যে যতক্ষণ চীন তার পাশে আছে, কেউ তার কোনো স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু করবে না।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভারতের অবস্থানও নেতিবাচক বলে মনে করেন জার্নি। তাঁর মতে, মোদির সরকার মুসলিম স্বার্থবিরোধী। রোহিঙ্গা বিষয়ে দেশটির সরকারের সেই অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। বন্দর, খনিজ সম্পদ ও ভূকৌশলগত কারণে তারা মিয়ানমারকে পাশে চায়। কোনোক্রমেই মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হতে চায় না তারা।

রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এখন তিন ভাগে বিভক্ত বলে মত দেন এই বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী। এর এক অংশ মিয়ানমারের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গারা। দ্বিতীয় অংশটি মিয়ানমারের ভেতরেই উদ্বাস্তু হয়ে একধরনের শ্রমশিবিরে অমানবিক জীবন যাপন করছে। আর বড় অংশ এখন মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।

মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি দলকে মিয়ানমারে ঢুকতে দিয়েছিল। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেটি পরিচালিত হয়। এরপর অ্যামনেস্টির দলটিকে রাখাইনে নিয়ে গিয়ে ৯০ জন হিন্দুর গণকবর দেখানো হয়। তাদের এমনটা বোঝানো হয়, কথিত রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন আরসার হামলায় তারা নিহত হয়েছে। এভাবে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচালিত করার চেষ্টা করে মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠী। কিন্তু উত্তর রাখাইনে বিধ্বস্ত রোহিঙ্গা জনপদে তাদের নেওয়া হয়নি।

আন্তর্জাতিক নানা পরিমণ্ডলে আলোচনায় রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব তো নেই-ই। এমনকি বড় বড় আন্তর্জাতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়ে গেলেও সেখানে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিই নেই। রোহিঙ্গাদের এভাবে ‘অদৃশ্য করার’ উদাহরণ তুলে ধরেন জার্নি। তিনি মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘের সই হওয়া এমওইউয়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এ প্রসঙ্গে।

উধাও রোহিঙ্গা
গত মাসে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে মিয়ানমার সমঝোতা স্মারকটি সই করে। গত সপ্তাহে ফাঁস হওয়া ওই সমঝোতা স্মারক নিয়ে প্রশ্ন তোলে রোহিঙ্গারাও। জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমারের যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তাতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি একবারের জন্যও বলা হয়নি। এ বিষয়ে কোনো রাখঢাক না রেখেই জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ঢাকায় ২ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘রোহিঙ্গা শব্দটি নিয়ে আমাদের মতপার্থক্য তো স্পষ্ট। আমরা মিয়ানমারের ওই জনগোষ্ঠীকে রোহিঙ্গা বলেই ডাকি। আর মিয়ানমার তাদের বাঙালি মুসলমান বলে অভিহিত করে। তাই রোহিঙ্গা শব্দটি নেই।’
তবে ‘রোহিঙ্গা’ পরিচিতি নিয়ে মিয়ানমারের সরকারের যত নেতিবাচক অবস্থান থাকুক, আন্তর্জাতিক মহলের তাতে ঔদাসীন্য থাকুক, মিয়ানমারের ঐতিহাসিক নানা ঘটনা কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। এ কথাই আজ বলেন মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন নিয়ে কাজ করা অধ্যাপক জন প্যাকার। তিনি প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হয়। দেশটির বিভিন্ন সরকারি ও সামরিক নথি প্রমাণ করে, বার্মা বা আজকের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে রোহিঙ্গারা সব সময়ই স্বীকৃত ছিল। ১৯৮২ সালে দেশটির নাগরিকত্ব আইন হওয়ার আগ পর্যন্ত এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। প্যাকারের মতে, রোহিঙ্গারা নিঃসন্দেহে মিয়ানমারের ‘কার্যকর জনগোষ্ঠী।’

প্রথম আলোর আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলোর আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন সামরিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো

প্যাকার জাতিসংঘের একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ১৯৯২ সালে মিয়ানমারে যান প্রথম। এখন রোহিঙ্গাদের ওপর যা চলছে, তাকে তিনি ‘ব্যাপক মাত্রার সুসংগঠিত মানবাধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিভিন্ন চুক্তি, সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাসহ আন্তর্জাতিক নানা চুক্তির কথা উল্লেখ করে প্যাকার বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর কী হয়েছে, এর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। সেখানে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গণহত্যা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র মিয়ানমারকে এর জবাবদিহি করতেই হবে।

আর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলা অব্যাহত নিপীড়ন রোধে দেশটিতে বিনিয়োগকারীদের সরে আসতে হবে বলেও মনে করেন প্যাকার। এ বিনিয়োগ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে মত দেন তিনি।
এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় নিয়ে কিছু সুপারিশ করেন প্যাকার। তিনি বলেন, নিরাপদে, সম্মানের সঙ্গে এবং সম্মতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এসবের পাশাপাশি তাদের ওপর চলা চরম নিগ্রহের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের সঠিক প্রত্যাবাসনের মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রতি আস্থা রাখা যায় না বলেও মত দেন প্যাকার। তিনি বলেন, শুধু ভালো ভালো কথায় কাজ হবে না। মিয়ানমারে ফিরে এসব মানুষের সঠিক ও সম্মানজনক জীবনের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঠেকাতে জাতিসংঘ কি ব্যর্থ হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্যাকার বলেন, ‘জাতিসংঘ আন্তসরকারের প্রতিষ্ঠান। তাকে সদস্যরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতে হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের এমন ক্ষমতা নেই যে তিনি সরাসরি কোনো দেশে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।’ এসব সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেও প্যাকার বলেন, যে কার্যকর ভূমিকা এই প্রতিষ্ঠানটির কাছে প্রত্যাশিত ছিল, তা পাওয়া যায়নি।

সাম্রাজ্যবাদী অত্যাচারের চারণভূমি রাখাইন রাজ্য
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের কাম্য ভূমিকা রাখতে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্বসম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে মশকরা করছে।
মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে একাধিক গবেষণার সঙ্গে জড়িত এমদাদুল ইসলাম রোহিঙ্গা সমস্যার ঐতিহাসিক নানা ঘটনা পরম্পরা তুলে ধরেন। ব্রিটিশ পরে জাপানি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এবং খোদ মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠীর কাছে নানা সময় রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর মানুষের নিগ্রহের চিত্র তুলে ধরেন তিনি। এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদ, দেশীয় সামরিক শক্তির অত্যাচারের চারণভূমি রাখাইন রাজ্য, আর এ রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।’
মিয়ানমারের দুই প্রতিবেশী এবং আঞ্চলিক শক্তিধর দেশ ভারত ও চীনের সমালোচনা করে এমদাদুল ইসলাম বলেন, কে কতটা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে যাবে, দুই দেশ তা নিয়েই ব্যস্ত। আর চীন যত দিন মিয়ানমারের পাশে আছে, দেশটি কাউকেই পাত্তা দেবে না।

রোহিঙ্গা সমস্যার তাহলে সমাধানের পথ কী?
এমদাদুল ইসলাম মনে করেন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব আনান কমিশনের প্রতিবেদনে এ সমস্যার সমাধানের বিস্তারিত এবং গ্রহণযোগ্য উপায়ের বর্ণনা আছে। এতে জাতিসত্তা, নিরাপত্তা, দ্বিপক্ষীয় নানা সম্পর্কের বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। আনান কমিশনের সেই প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

তবে আলোচকেরা মনে করেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এখন মিয়ানমার সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের যে অবস্থান, তার পরিবর্তন দরকার। তাঁরা বলেন, এ জাতিগোষ্ঠীর মানুষ কোনো সশস্ত্র তৎপরতায় নেই। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোনো অবস্থানও তাদের নেই। কোনো দূতাবাসে মানুষ জিম্মি করার নজির তাদের নেই। তবে নিপীড়িত এসব মানুষের নিগ্রহ দ্রুত বন্ধ না হলে তা মিয়ানমার শুধু নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন৵ও হুমকি আসন্ন।