হামলাকারীদের ছোড়া ইটে পাজেরোর কাচ ভেঙেছে

অলি আহমদ। ফাইল ছবি
অলি আহমদ। ফাইল ছবি

কুমিল্লার চান্দিনায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে এ হামলায় হয়। হামলার সময় অলি আহমদ ওই গাড়িতেই ছিলেন।

দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অলি আহমদ চান্দিনার রেদোয়ান আহমদ ডিগ্রি কলেজে (ক্যাম্পাস-২) নবনির্মিত একটি ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু চান্দিনা থানা পার হওয়ার সময় ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

অলি আহমদ যে কলেজে যাচ্ছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠাতা এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমদ নিজে। রেদোয়ান আহমদ জানিয়েছেন, তিনি অলি আহমদকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘটনাস্থলের নিকটেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অলি আহমদ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে চান্দিনা থানা পার হওয়ার পরই ওই হামলায় হয়। হামলাকারীরা শুধু অলি আহমদের পাজেরো গাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা ইটপাটকেল মেরে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে ফেলেন। পরে অলি আহমদের গাড়িবহরে থাকা লোকজন ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান।

অলি আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই ২০-২৫ জন ছেলে আমার গাড়ির ওপর আক্রমণ করল। ইট মেরে গ্লাস ভেঙে ফেলল। যদি গ্লাস ভেদ করে ইট মাথায় লাগত—আমি মারাই যেতাম। আমার মনে হয়, তাঁরা হত্যার উদ্দেশ্যেই আক্রমণ করেছে।’

রেদোয়ান আহমদ বলেন, ‘এটা ছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মসূচি। কেন এই কর্মসূচিতে আক্রমণ করল, তা বুঝতে পারছি না। অথচ আশপাশেই পুলিশ ছিল। এরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রাণ গোপাল দত্তের অনুসারী ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মী। মিছিলে তাঁরা আওয়ামী লীগের স্লোগান ব্যবহার করেছে।’

হামলার ঘটনার পর অলি আহমদ ওই কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘পুলিশের সামনে মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা হামলা করবে, এ জন্য এ দেশকে স্বাধীন করিনি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি, আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাই, যার কর্মীরা মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করতে চায়! পুলিশ ও ইউএনও অফিসের পাশে, আগে-পেছনে একাধিক পুলিশ অফিসার এমনকি ওসির উপস্থিতিতে এ ধরনের হামলা আমি কল্পনাও করতে পারি না। তারা দেশের ক্ষতি করছে, আওয়ামী লীগের ক্ষতি করছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।’

প্রাণ গোপাল দত্তের অনুসারী হিসেবে পরিচিত চান্দিনার মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম প্রধান বলেন, ‘প্রাণ গোপাল দত্ত একজন সাদা মনের সৎ মানুষ। এই ধরনের নোংরা রাজনীতি তিনি করেন না। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে শতবার ভাবা উচিত। নিজেদের জোটের অন্ত কলহে যারা ভুগছেন, তাঁরা এমন মিথ্যাচার করতেই পারেন।’ চান্দিনা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রলীগ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শামছুল ইসলাম বলেন, ‘পেছন দিক থেকে কারা ঢিল মেরে চলে গেছেন, তা বলতে পারব না। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’