ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ ঢাকায়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (বাঁয়ে) শুক্রবার বঙ্গবন্ধু বিমানঘাঁটিতে রাজনাথ সিংকে (মাঝে) স্বাগত জানান। এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা, ১৩ জুলাই। ছবি: ইউএনবি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (বাঁয়ে) শুক্রবার বঙ্গবন্ধু বিমানঘাঁটিতে রাজনাথ সিংকে (মাঝে) স্বাগত জানান। এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা, ১৩ জুলাই। ছবি: ইউএনবি

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তিন দিনের সফরে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন। দুই প্রতিবেশী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ দমনে সহযোগিতা, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, অস্ত্র, মাদক ও অবৈধ মুদ্রা পাচারসহ আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনের বিষয়গুলো এই সফরে গুরুত্ব পাবে। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশেষ বিমানে করে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু বিমানঘাঁটিতে নামেন রাজনাথ সিং। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা উপস্থিত ছিলেন।

সরকারি একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইউএনবি জানায়, শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজনাথ। ওই বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনাথ সিং শনিবার যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতের নতুন ভিসা আবেদন কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। সেখান থেকে দুপুরে রাজশাহী হয়ে সারদার পুলিশ একাডেমিতে যাবেন। সেখানে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ভবন উদ্বোধন করবেন দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে তাঁর সম্মানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন রাজনাথ সিং।
রোববার সকালে রাজনাথ সিং ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন। এরপর প্রার্থনা করতে যাবেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেখান থেকে সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে সই হবে সংশোধিত ভ্রমণ চুক্তি ২০১৮। বিকেলেই দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে নয়াদিল্লিতে সর্বশেষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই প্রতিবেশী দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের ষষ্ঠ বৈঠকে বিদ্যমান সহযোগিতা আরও কীভাবে বাড়ানো যায়, এ নিয়ে আলোচনা হবে। সন্ত্রাসবাদ দমনের বিষয়ে সহযোগিতা, বিশেষ করে তরুণদের উগ্রপন্থায় দীক্ষিত করতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা রোধের বিষয়ে দুই মন্ত্রী কথা বলবেন। গত বছরের আগস্টের পর থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়ায় তাদের উগ্রপন্থায় পরিচালিত করার ঝুঁকির বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় এ প্রসঙ্গটি আসতে পারে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধের প্রসঙ্গটিও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। তবে এবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন গত ছয় মাসে ভারতের সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে একজনও প্রাণ হারায়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনায় ভারত থেকে অপরাধী ও বন্দী প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গটি তোলার কথা রয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে গরু, অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক পাচার বন্ধের পাশাপাশি অবৈধ ভারতীয় মুদ্রা পাচারের প্রসঙ্গগুলো আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে আন্তসীমান্ত অপরাধ রোধে যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে, তা আরও জোরালো করার কথা তুলতে পারে ভারত।