নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, সরকারকে ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অনৈতিক পথে হাঁটবেন না। সোজা পথে হাঁটুন। কারণ, আপনারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আপনারা নোংরা কৌশল থেকে বের হয়ে এসে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। গণতন্ত্রের পথে আসুন।’

আজ রোববার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলীয় নেতৃত্ব ও নির্বাচন থেকে সরাতে সরকার দলীয় গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মূলত, বিএনপিকে সবদিক থেকে বেকায়দায় ফেলতে এ অপতৎপরতা শুরু করেছে সরকার। তিনি আরও বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারার মতো নির্বাচন কমিশন অনুরূপ একটি ধারা চালু করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে বিএনপি জানতে পেরেছে। এর উদ্দেশ্য বিএনপির নেতৃত্ব থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে সরানোর পদক্ষেপ নেওয়া। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করার জন্য এই অপতৎপরতা শুরু করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাঁকে সুচিকিৎসা না দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার বেলা তিনটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শুক্রবার বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিকেলে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা সংশোধন করেছে বলে ১১ জুলাই সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ‘অলীক’, ‘অবাস্তব’। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য একটি গভীর ‘চক্রান্তের’ অংশ। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এটা এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই। এ দলের মাঝে আর রাজনীতি বলে কোনো শব্দ অবশিষ্ট নেই। আওয়ামী লীগ মনে করেছে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় তারা এখন নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে সরকার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সরকার ১/১১-র মইনউদ্দীন ও ফখরুদ্দীন সরকারের মতো ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু করেছে। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকার গোয়েন্দা সংস্থা ও গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছে।’ তিনি আরও বলেন, ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সাবেক মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর দলীয় ও সংসদীয় পদে বহাল আছেন। কিন্তু এটাতে কোনো দোষ নেই। শুধু দোষ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। তাঁকে একটি ‘সাজানো’ মামলায় দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার চায় খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে। এ জন্য তাঁর শারীরিক অবস্থা কঠিনতর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বারবার অনুরোধ করা হলেও তাঁকে পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছে না। খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায় শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে নিতে হবে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।