কুষ্টিয়ায় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ছাত্রলীগ নেতা রাজীব বহিষ্কার

রাজীব আহম্মেদ। ছবিটি তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
রাজীব আহম্মেদ। ছবিটি তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজীব আহম্মেদকে (২২) সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

রাত সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সাদ আহম্মেদ তাঁদের পৃথক ফেসবুক আইডিতে বিজ্ঞপ্তিটি আপলোড করেন।

ইয়াসির আরাফাত তাঁর ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘কারও ব্যক্তিগত অপকর্ম, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না। ছাত্রলীগে সন্ত্রাসবাদের কোনো ঠাঁই নেই। ছাত্রলীগ অস্ত্রে নয়, কলমের শক্তিতে বিশ্বাসী। বাবার টাকার গরম দেখাতে লিডারি দরকার নেই। সংগঠনের বাইরে গিয়ে ক্যাডারি করো।’

রাজীব আহম্মেদকে নেতা বানানো ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা নিয়ে সংগঠনটির জেলাপর্যায়ে বিভিন্ন নেতা-কর্মীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, নেতা বানানোর আগে কেন তাঁদের সম্বন্ধে খোঁজখবর নেওয়া হয়নি। তাঁরা মনে করছেন, কমিটি করার সময় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অনুসারীরা দুই দলে ভাগ হয়ে যান। এতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই বিষয়গুলো আরও ভালো করে খতিয়ে দেখা উচিত।

গত সোমবার বিকেল সোয়া পাঁচটায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায় রাজীবের বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২)। রাজীবের শোয়ার ঘর থেকে ইয়াবা ও গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব। এই ঘটনায় পরে দুটি মামলা করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল রাতে রাজীবের বহিষ্কার আদেশের কপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাঁদের ফেসবুক পেজে আপলোড করার পর অন্য নেতারাও তা পোস্ট করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, বহিষ্কার আদেশের কপি পোস্ট করার হিড়িক দেখে মনে হচ্ছে, এটা খুবই বাহবার কাজ হয়েছে। বরং এতে সংগঠনের প্রতি মানুষের বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।

কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস আই দিপু তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমার দেখা স্বল্প সময়ে সর্বাধিক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতার জেলা এই কুষ্টিয়া। বহিষ্কারই যখন করতে হবে, তখন নেতা বানানোর দরকার কী? আর সবচেয়ে বড় কথা নেতা বানানোর আগে যোগ্যতা বিচার করা দরকার। নিজ প্রয়োজনে বা কাছের মানুষের সুপারিশে যে-কাউকেই নেতা বানানো চলবে না।’

এস আই দিপু পোস্টে বলেন, ‘যেকোনো ইউনিটের কমিটি সাজানোর ক্ষেত্রে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের একটা ভাগ থাকে। ভাগটা এমন—২০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে ১০ জন সভাপতি ও ১০ জন সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশে বা পরিচিত হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে ১০ জনের একজন তাঁর পরিচিত ভাই বা নেতাকে চেনে। অন্য ভাই বা নেতার কিন্তু ওই ১০ জনের মধ্যে ওই একজনকে না চেনাটা স্বাভাবিক। বি. দ্র.: কোনো ভাই দয়া করে পোস্টটি ডিলিট করার জন্য ফোন বা ম্যাসেজ দেবেন না।’