নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুরে ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম উদ্দিন হত্যা মামলার রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত লাশ গুম করার অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
জরিমানার টাকা আসামিদের কাছ থেকে আদায় করে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় সাত আসামির মধ্যে তিনজন উপস্থিত ছিলেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি ওয়াজেদ আলী খোকন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা ব্যক্তিরা হলেন সাদেকুর রহমান (৩৮), মো. ইকবাল হোসেন (৩০), সোহাগ (৩০) ও বাবু কাজী (৩৫)।
নিহত হালিম উদ্দিনের বাবা আফসার উদ্দিন বলেন, ‘রায়ে আংশিক ন্যায়বিচার পেয়েছি। আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম এলেও তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী সুলতানুজ্জামান জানান, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট পাওনা টাকা আদায়ে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন হালিম উদ্দিন। এক দিন পর ১৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর দেওয়ানবাড়ী এলাকার একটি ডোবা থেকে তাঁর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হালিম উদ্দিনের ছোট ভাই শামীম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাদেকুর রহমান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া সাদেকুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে এবং হত্যাকাণ্ডের জড়িত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে সাদেকুর বলেন, পাওনা টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় বন্ধু ইকবাল হোসেন তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে হালিম উদ্দিনকে আসামিরা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন এবং গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার হত্যার পর লাশ পাঁচ টুকরো করে ডোবায় ফেলে দেন।

এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ ২৫ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।