আরেকটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি সুমন

সন্দেহভাজন খুনি সুমন ছবি: সংগৃহীত
সন্দেহভাজন খুনি সুমন ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টির বয়স মাত্র ১৬ বছর। তেজগাঁও একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। বাবা-মায়ের সঙ্গে বনানীর বস্তিতে থাকত সে। গত মঙ্গলবার রমনার একটি হোটেলে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।

রমনা থানা-পুলিশ বলছে, বৃষ্টির সঙ্গে তার বড়বোনের স্বামী সুমনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এক বছর আগে এই দুজনকে নিয়ে এলাকায় বৈঠক হয়। বাধা নিষেধ সত্ত্বেও সুমন আর বৃষ্টি সম্পর্ক ধরে রাখে। কয়েক মাস আগে বৃষ্টি আবার আরেকজন ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন কৌশলে বৃষ্টিকে হোটেলে ডেকে এনে হত্যা করে।

মঙ্গলবার রাতে রমনার মগবাজারের একটি হোটেল থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বৃষ্টির বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় সুমনকে আসামি করে মামলা করেন। বুধবার সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য আদালত সুমনকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
সন্দেহভাজন খুনি সুমন সম্পর্কে আদালতকে পুলিশ জানিয়েছে, বৃষ্টির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে সুমন। পরে বৃষ্টির বাবা-মা সুমনকে সতর্ক করে দেয়। তবে দুজন সিদ্ধান্ত নেয়, কোরবানির ঈদ বোনাসের টাকা পেলে বিয়ে করবে। তবে আসামি সুমন জানতে পারে, বৃষ্টি আরেকটি ছেলেকে ভালোবাসে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি আরেকটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে জানতে পারার পর ক্ষুব্ধ হয় সুমন। তখন থেকে সুমন বৃষ্টিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

এস আই মিজান বলছেন, বৃষ্টিকে যে হোটেলে খুন করা হয় সেই হোটেলে আগেও বৃষ্টি ও সুমন এসেছে। বৃষ্টিকে সুমন বলেছিল, তাঁর মোবাইল ফোনে বৃষ্টির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও আছে। অন্য ছেলের সঙ্গে বৃষ্টি যদি সম্পর্ক বজায় রাখে তাহলে তাঁর কাছে থাকা ছবি সব জায়গায় ছড়িয়ে দেবে। এস আই মিজান আরও বলেন, সুমনের মোবাইল ফোনে কোনো ছবি দেখতে না পেয়ে সুমনকে বকাঝকা করে বৃষ্টি। পরে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সুমন বৃষ্টির ওড়না দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বৃষ্টির বড় বোন হাছনা (২২) সুমনের দ্বিতীয় স্ত্রী। সুমন ও হাছনা দম্পতির দুই বছর বয়সী ছেলে আছে। পুলিশ বলছে, বনানী থানায় ২০১৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের মামলা আছে।

বৃষ্টির পরিবার সুমনের ফাঁসি দাবি করেছে। বৃষ্টির মা রহিমা বলেন, ‘আমার মেয়েকে খুনই করে ফেলল সুমন।’