আইনজীবীকে কুপিয়ে মারল চাচাতো ভাই

ফারদিন আহম্মেদ ফরহাদ
ফারদিন আহম্মেদ ফরহাদ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে এক আইনজীবীকে তাঁর চাচাতো ভাই কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার বেলা আড়াইটায় উপজেলার সাগরদিঘি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল পাঁচটায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

নিহত ব্যক্তির নাম ফারদিন আহম্মেদ ফরহাদ (৩৮)। তিনি ২০১৩ সাল থেকে টাঙ্গাইল আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রুবেল আহমেদ (২৮)। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রুবেল কিছুটা মাদকাসক্ত।

নিহত ব্যক্তির বড় ভাই লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে রুবেল এক মেয়েকে ‘কোর্ট মেরেজ’ করার জন্য টাঙ্গাইলে ফারদিনের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু ফারদিন মেয়ের অভিভাবক ছাড়া এ ধরনের বিয়েতে সহযোগিতা করতে অপারগতা প্রকাশ করে। হয়তো এ জন্য রুবেল ক্ষুব্ধ ছিল। আজ (শনিবার) দুপুরে রুবেল আমাদের বাসায় আসে। দুপুরে সে আমাদের বাসায় ভাতও খেয়েছিল। কিন্তু সে চাপাতি সঙ্গে করে নিয়ে আসে। ওই চাপাতি দিয়েই ফারদিনকে কোপানো হয়।’ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া ১০টা) লুৎফর রহমান তাঁর ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুবেলকে একমাত্র আসামি করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এলাকাবাসীর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত রুবেলের পরিবারের সঙ্গে ফারদিনদের পরিবারের জমি নিয়ে পুরোনো বিরোধ আছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে এটাও কারণ হিসেবে কাজ করতে পারে।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই বাড়ির লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আইনজীবী ফারদিনকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বিকেল পাঁচটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, ঘটনার পরপরই চাপাতি হাতে সাগরদিঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে রুবেল। পুলিশের তদন্ত কেন্দ্রটি ফারদিনদের বাসার আনুমানিক ২০০ গজ দূরে অবস্থিত। 


আইনজীবী ফারদিনের সহকারী মফিদুল ইসলাম বলেন, ফারদিন টাঙ্গাইলে বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী, সন্তানসহ বসবাস করতেন। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় তিনি বাড়িতে বেড়াতে আসেন। শনিবার দুপুরে পাশের বাড়ি থেকে তাঁর চাচাতো ভাই রুবেল বেড়াতে আসেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় রুবেল এ ঘটনা ঘটায়।

সখীপুর থানার উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, নিহত আইনজীবীর সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। কপাল, নাক, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য কোপের চিহ্ন রয়েছে।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। রুবেল পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।