মাদক ব্যবসার কথা পুলিশকে বলে দেওয়ায় পল্লবীতে খুন হন সেলিম

মাদক ব্যবসার কথা পুলিশকে বলে দেওয়ায় প্রাইভেট কারের চালক সেলিম খুন হয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামির মধ্যে দুজনই তাঁদের জবানবন্দিতে আদালতকে এমন তথ্য দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত ৬ এপ্রিল রাজধানীর পল্লবীর ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন প্রাইভেট কার চালক সেলিম (৩১)। পরে ১২ এপ্রিল একই থানার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার একটি ঝিলে সেলিমের ভাসমান লাশ পাওয়া যায়।

১৩ এপ্রিল সেলিমের স্ত্রী জেসমিন বেগম অজ্ঞাতব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে রোববার ফরহাদ নামের এক ব্যক্তি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে কামাল নামের আরেক ব্যক্তি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানায়।

গ্রেপ্তার হওয়া ফরহাদ ও কামালের জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেলিমকে খুনের দায় স্বীকার করে ফরহাদ ও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই খুনে ফরহাদসহ কয়েকজন অংশ নেন। তাঁরা সবাই সেলিমের পরিচিত ছিলেন। একসঙ্গে বসে মাদক সেবন করতেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা বাশার বলেন, রোববার আদালতে জবানবন্দি দেওয়া ফরহাদের মিরপুর এলাকায় মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান রয়েছে। পাশাপাশি তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। সেলিম, কামালসহ বাকি ব্যক্তিরাও মাদক ব্যবসা করতেন।

ফরহাদের আগে সেলিম খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কামাল। এসআই বাশার বলেন, দুজনই আদালতে বলেছেন, মাদক কেনার জন্য ফরহাদ ও কামালদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল সেলিম। কিন্তু সেলিম মাদক কিনে দেননি, টাকাও ফেরত দেয়নি। আবার ফরহাদ, কামালসহ বাকিদের মাদক ব্যবসার কথা পুলিশের কাছে ফাঁস করে দেন সেলিম। এরপর সেলিমকে খুন করার জন্য পরিকল্পনা করেন তাঁরা।

পুলিশ কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও সেলিম, ফরহাদ, কামালসহ কয়েকজন মিলে ইয়াবা সেবন করেন। এরপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেলিমকে খুন করেন তাঁরা।

আদালত সূত্র বলছে, সেলিম খুনের ঘটনায় ফরহাদ ও কামাল ছাড়া পুলিশ আকরাম নামের আরেক সন্দেহভাজন খুনিকে গ্রেপ্তার করেছে। আকরাম এখন কারাগারে আছেন।

সেলিমের স্ত্রী জেসমিন বেগম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন তাঁর স্বামী। কিন্তু কেন তাঁর স্বামীকে খুন হয়েছে তা তিনি জানেন না। জেসমিন দাবি করেন, তাঁর স্বামী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। মাঝেমধ্যে মাদক সেবন করতেন বলে তিনি শুনেছেন।

জেসমিন জানান, তিনি এখন অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। তাঁর ১১ বছর বয়সী ছেলে জাহিদ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। তাঁর স্বামীকে যাঁরা খুন করেছেন, তিনি তাঁদের ফাঁসি চান।