কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত

পদ্মা নদীতে ঘূর্ণি স্রোত আর বৃষ্টির কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। কাঁঠালবাড়ি ঘাট, ২৩ জুলাই। ছবি: অজয় কুন্ডু
পদ্মা নদীতে ঘূর্ণি স্রোত আর বৃষ্টির কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। কাঁঠালবাড়ি ঘাট, ২৩ জুলাই। ছবি: অজয় কুন্ডু

পদ্মা নদীতে ঘূর্ণি স্রোতের কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। নৌপথে ১৮ থেকে ১৯টি ফেরি চলাচল করলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ নৌপথে ফেরি চলাচল করছে ১২টি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এই নৌপথে চলাচলকারী দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও চালকেরা।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ভারী বৃষ্টি শুরু হলে স্পিডবোট ও লঞ্চ চলাচল সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা হয়। কয়েক ঘণ্টা লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। অন্যদিকে ফেরি স্বল্পতা থাকায় ঘাট এলাকায় দুর্ভোগ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালাবাড়ি ফেরিঘাট সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধিতে ঘূর্ণি স্রোতের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ কারণে স্রোতে ফেরি এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে সাতটি ডাম্ব ফেরি বন্ধ রাখা হয়। বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করে ফেরিগুলো তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে অতিরিক্ত ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় ব্যয় হচ্ছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটের উভয় পারে আটকে আছে নৈশকোচ, অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক, কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়িসহ তিন শতাধিক যানবাহন। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পরিবহনের চালকেরা।
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালাবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকায় ও খননকাজ চলমান থাকায় কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরিগুলো বিকল্প চ্যানেল ব্যবহার করতে হয়। এর ফলে দ্বিগুণের বেশি সময় নিয়ে কে-টাইপ, রোরো ও ভিআইপি ফেরি চলাচল করছে। তাই ঘাটে এলাকায় যানবাহনের কিছুটা চাপ রয়েছে। তাই সাধারণ যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে যাত্রীবাহী বাসকে প্রাধান্য দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে।
ঢাকাগামী যাত্রী অপূর্ব অপু বলেন, ‘দুপুর ১২টায় ঘাটে এসে বসে আছি। ফেরিও পাচ্ছি না লঞ্চও পাচ্ছি না। দুই ঘণ্টা বসে থাকার পরে একটি ফেরিতে উঠতে পেরেছি। একটু বৃষ্টি আর পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেলেই ঘাটে হাজার সমস্যা দেখা দেয়। আমরা এই দুর্ভোগের সমাধান চাই।’
চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দুই দিন ধরে টার্মিনালে বসে ট্রাক নিয়ে বসে আছি। খাওয়াদাওয়া-ঘুম এখানেই করতে হচ্ছে। মালিকের পণ্য খালাস না করতে পারলে ভাড়াও আসবে না। এভাবে বসে থাকলে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে।’
ঢাকাগামী সুরভী পরিবহনরে চালক রাহাত হোসেন বলেন, ‘ফেরির অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে। দু-তিন ঘণ্টা পর একটি করে ফেরি আসে। যাত্রী নিয়ে ঘাটে এভাবে বসে থাকতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘাটে এ অবস্থাই চলছে।’
কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক কুশল কুমার সাহা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া থাকায় ঘাটে যানবাহনের চাপ কিছুটা বেশি। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’