বিচ্ছেদে থাকা দুই শিশুর মা-বাবার হাজিরা কাল

মা ও বাবার বিচ্ছেদের পর সন্তানদের নিজ হেফাজতে নিতে করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিশু ও বিবাহবিচ্ছেদে থাকা তাদের মা ও বাবাকে আগামীকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগে হাজির হতে হচ্ছে। আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যেদের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের ওই উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

আদালতে শিশুর বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মওদুদ আহমদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ তাজরুল হোসেন। অন্যদিকে মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও এম হান্নান।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী সৈয়দ তাজরুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই শিশুর তদারকিতে নতুন যুক্ত চট্টগ্রামের সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক শহিদুল ইসলামকেও মঙ্গলবার আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

আইনজীবীদের সূত্র বলেছে, ২০০৮ সালের ১২ মার্চ চট্টগ্রামের মাইনুল ইসলাম চৌধুরী ও রুমানা ফয়েজের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই সন্তান। ছেলে শিশুর বয়স সাত আর কন্যাশিশুটির বয়স নয়। পারিবারিক বিরোধের সূত্র ধরে গত বছরের ২১ নভেম্বর ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর দুই সন্তান তাদের বাবার কাছে ছিল। তবে সন্তানদের নিজ হেফাজতে নিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তাদের মা। শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, দুই শিশু সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে। মাকে অবহিত করে বাবা এক দিন পরপর শিশুদের গিয়ে দেখতে পারবেন। আরও বলা হয়, বাবা শুক্রবার শিশুদের নিয়ে যাবেন ও শনিবার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেবেন।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের বাবা ও মা, যার ওপর শুনানি নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এতে বলা হয়, শিশুদের নিরাপত্তা ও হেফাজত তদারকির জন্য চট্টগ্রামের সমাজসেবা বিভাগের একজন প্রবেশন কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। দুই শিশু রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাবার হেফাজতে থাকবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঁচটায় প্রবেশন কর্মকর্তা দুই শিশুকে মায়ের কাছে নিয়ে যাবেন এবং শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় বাবার কাছে ফিরিয়ে দেবেন।

তবে ওই আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় মা চলতি বছরের ১৪ মার্চ আদালত অবমাননার আবেদন করেন, যার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২৯ মার্চ কারণ দর্শাতে আদেশ দেন। বাবা ও প্রবেশন কর্মকর্তার তরফ থেকে লিখিতভাবে জবাব দেওয়া হয়। এরপর শিশুদের স্বার্থ বিবেচনা করে ৯ জুলাই আপিল বিভাগ প্রবেশন কর্মকর্তা পরিবর্তন করে চট্টগ্রামের সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালকের নিচে নন, এমন কর্মকর্তাকে তদারকির জন্য নিয়োজিত করতে নির্দেশ দেন। এরপর ওই উপপরিচালককে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার শুনানি হবে।